E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সমাজকল্যাণমন্ত্রী সপ্তম শ্রেণী পাস!

২০১৪ আগস্ট ১১ ১৩:৪৯:১৯
সমাজকল্যাণমন্ত্রী সপ্তম শ্রেণী পাস!

নিউজ ডেস্ক : সমাজকল্যানমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী জাহাজঘাটের কাছে একটি খ্রিস্টান মিশনারীজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংলিশ মিডিয়ামে ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করা অবস্থায় পিতার সঙ্গে মৌলভীবাজারে চলে আসনে। ১৯৬৭ সালে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে ১৯৬৮ সালে বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হন। আর স্কুলমুখী হননি। অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। কলকাতায় জন্মগ্রহণ নেয়া মহসিন আলীর পিতা জাহাজঘাটের ঘাট সারং ছিলেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে তার নির্বাচনী হলফ নামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা লিখেছিলেন এসএসসি। কিন্তু কোন বোর্ডের অধিনে কোন স্কুল থেকে এসএসসি দিয়েছেন তার উল্লেখ ছিল না। আবার জাতীয় সংসদের গেজেটে লিখেছেন এমবিএ।

সৈয়দ মহসিন আলী ২০০৮ সালের নির্বাচনে হলফনামায় উল্লেখ করেন এমবিএ পাশ কিন্তু সঙ্গে কোনো প্রমাণ জমা দেননি। এসব বিষয় নিয়ে রফিকুল ইসলাম রসিক নামে এক ব্যক্তি নির্বাচন কমিশিনে লিখিত আপত্তি জানালেও তা আমলে নেয়া হয়নি বাচাইয়ের দিন।

১০ম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সময় তিনি ঋণ ও বিল খেলাপি ছিলেন। বিদুৎবিল, গ্যাসবিল ও টেলিফোন বিল খেলাপি ছিল মনোনয়ন বাছাইয়ের ৫দিন পরেও। তখন তিনি প্রশাসনে চাপ সৃষ্টি করে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করান। নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত হলফনামা থেকে জানা যায়, তিনি সাউথইস্ট ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখা থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তা খেলাপি হয়ে ২ কোটি টাকার উপরে এসে ঠেকে। এমতাবস্থায় ব্যংক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তার বন্ধকী সম্পত্তি নিলাম আহ্বান করে। গত ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ছিল ২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের বিধান অনুযায়ি মনোনয়ন দাখিলের ৭ দিন পূর্বে প্রার্থীকে ঋণ খেলাপিমুক্ত হতে হয়। সেক্ষেত্রে সৈয়দ মহসীন আলী ঋণ পুণঃতফশিলকরণ করেন ৫ ডিসেম্বর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন অনুযায়ি খেলাপি ঋণ ২য় দফা পূণঃতফশিল করতে হলে সমূহ ঋণের ২৫ শতাংশ জমা দিতে হয়। সেজন্য ব্যাংকে তার জমা দেয়ার কথা ছিল ৩৫ লাখ টাকা। কিন্তু তিনি নগদ জমা দেন মাত্র সাড়ে ১৭ লাখ টাকা। বাকি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য ৭দিন সময় নিয়ে একটি অঙ্গিকারনামায় স্বাক্ষর করেন। পরে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বিপরীতে একটি চেক দিলেও তা ক্যাশ হয়নি সময়ের মধ্যে। তখন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি ঋণের পুণঃতফশিল করেন। পরবর্তীতে এই চেকের টাকাও পরিশোধ না হওয়ায় ঋণটি খেলাপি ঋণে পরিণত হয় যা বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনে অবৈধ।

সৈয়দ মহসিন আলী তাঁর নগদ অর্থ দেখিয়েছেন ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু কোন ব্যাংকে জমা তা উল্লেখ করেননি। বর্তমানে এই ঋণ খেলাপির অর্থ ২ কোটি টাকার ওপরে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী কোনো প্রার্থী ভুল তথ্য দিলে অথবা তথ্য গোপন করলে তিনি তার সংসদ সদস্যপদ হারাবেন। অথচ মহসিন আলী রয়েছেন স্বমহিমায়। সরকারি দলের এমপি। ক্যাবিনেট মন্ত্রী। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি! সূত্র: যুগান্তর।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ১১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test