E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান : চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজে পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ

২০২০ মে ১৮ ১৮:৩২:৪৬
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান : চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজে পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ

নিউজ ডেস্ক : প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সোমবার (১৮ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে নিজস্ব সংকেত ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়েছে। এই সতর্কতার পদক্ষেপ হিসেবে বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পণ্যবাহী জাহাজগুলো জেটি থেকে সমুদ্রে পাঠানো হচ্ছে।

সোমবার (১৮ মে) বন্দর সচিব ওমর ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘বিকেলে আবহাওয়া অফিস থেকে ৬ নম্বর সিগনাল জারির পর অ্যালার্ট-৩ জারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপরই জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। জেটি থেকে পালাক্রমে জাহাজ সাগরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জেটিতে থাকা জাহাজে ব্যাপক আঘাত লাগে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে জাহাজ জেটি থেকে কিছুটা দূরে সাগরে পাঠানো হচ্ছে।’

তিনি জানান- কুতুবদিয়া, সেন্টমার্টিন, কক্সবাজারসহ বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজ রয়েছে ১৬০টি। বন্দর জেটিতে অবস্থান করছে ১৫টি জাহাজ। দুপুরে দুটি জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব জাহাজকে সার্বক্ষণিক ইঞ্জিন সচল রাখার এবং গভীর সাগরে নিরাপদ অবস্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দর সচিব বলেন, ‘যেসব ছোট লাইটরেজ জাহাজের মাধ্যমে বহির্নোঙর থাকা বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হয়, সেসব জাহাজকে কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর উজানে গিয়ে নোঙর করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করছে কোস্টগার্ড পূর্বাঞ্চল।’

১৯৯২ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রণীত ঘূর্ণিঝড়-দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং ঘূর্ণিঝড়–পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবহাওয়া অধিদফতরের সংকেত অনুযায়ী চার ধরনের সতর্কতা জারি করে বন্দর। আবহাওয়া অধিদফতর ৩ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর প্রথম পর্যায়ের সতর্কতা বা ‘অ্যালার্ট-১’ জারি করে। ৪ নম্বর সংকেতের জন্য বন্দর অ্যালার্ট-২ জারি এবং বিপৎ সংকেত ৫, ৬ ও ৭ নম্বরের জন্য ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়। মহাবিপদ সংকেত ৮, ৯ ও ১০ হলে বন্দরেও সর্বোচ্চ সতর্কতা বা ‘অ্যালার্ট-৪’ জারি করা হয়।

সোমবার ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। বিকেল ৩টা নাগাদ প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মাজহারুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষ রাত নাগাদ এই ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা ও চট্টগ্রাম উপকূলের মাঝ দিয় অতিক্রম করতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ২১০ কিলোমিটার থাকবে, যেটি ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা ২০০৭ সালের আঘাত হানা সিডরের সমপরিমাণ বেগ।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ঝড়ো হাওয়া এবং হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য বোরো ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ব হলে তা দ্রুত কাটার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভয়াবহ এ ঘূর্ণিঝড়টি দু-একদিনের মধ্যেই আঘাত হানতে পারে, এমন সম্ভাবনা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হতে পারে।

(ওএস/এসপি/মে ১৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test