E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ডিবি কার্যালয়ে সাবরিনা

২০২০ জুলাই ১৪ ১২:৫১:১৩
ডিবি কার্যালয়ে সাবরিনা

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর তেজগাঁও থানায় জেকেজির বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতারণার মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ওই মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করা হয়।

জেকেজির চেয়ারম্যান আলোচিত চিকিৎসক সাবরিনা আরিফকে ওই একই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবিতে নেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি চিকিৎসার নামে যে প্রতারণা করেছে সেখানে তার ভূমিকাসহ সংশ্লিষ্টতার আদ্যোপান্ত খোঁজা হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, জেকেজির বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত আমরা করছি।

ওই মামলায় সোমবার (১৩ জুলাই) ডা. সাবরিনা আরিফকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে চার দিনের রিমান্ড চেয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে তেজজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাসনাত খন্দকার। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে জেকেজির বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, মামলার আসামি ডা. সাবরিনা আরিফ জেকেজি হেলথ কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মামলার ঘটনায় জড়িত তার অপরাপর সহযোগী আসামিদের নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম এবং লোগো ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে পজিটিভ জাল রিপোর্ট সরবরাহ করে নিরীহ লোকদের টাকা আত্মসাৎ করেন। এরকম অবহেলাজনিত কাজের সাহায্যে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রমণ বিস্তারে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডা. সাবরিনা স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওপর বিভিন্ন সূত্রে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সরকারি কাজ পাইয়ে দিতেন। যার ফলশ্রুতিতে জেকেজি হেলথ কেয়ার বেপরোয়াভাবে সমাজে এইরূপ ক্ষতিসাধন করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিত মর্মে সাক্ষ্য পাওয়া যাচ্ছে।

ডা. সাবরিনা তার অপরাপর সহযোগীদের সহায়তায় করোনাভাইরাস মহামারির সময় অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে সমাজবিরোধী এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন। তার প্রতিষ্ঠান জেকেজি ঢাকা শহরসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোগীদের স্যাম্পল কালেকশন করে তা পরীক্ষা না করে হাজার হাজার ভুয়া সার্টিফিকেট (নেগেটিভ/পজিটিভ) প্রদান করেছে। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশে যাওয়ার পূর্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে জাল বা ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে।

অন্যদিকে নিজেকে ‘নিদোর্ষ’ দাবি করে আদালতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ডা. সাবরিনা বলেছেন, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। রিমান্ড শুনানি চলাকালে বিচারকের উদ্দেশে সাবরিনা বলেন, ‘জেকেজির চেয়ারম্যান আমাকে বলা হচ্ছে। কিন্তু আমি জেকেজির চেয়ারম্যান না। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নির্দোষ।’

মামলার বাদী কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি কল্যাণপুরে এক বাসার কেয়ারটেকার। আমার বাসার মালিক করোনা আক্রান্ত হন। বাসার মালিক আমাদের সাতজনকে করোনা পরীক্ষা করাতে বলেন। আমরা জেকেজি হেলথ কেয়ারে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করে প্রতারিত হয়েছি। তাই আমি বাদী হয়ে একটি মামলা করেছি। দোষীরা শাস্তি পাক-এটা আমি চাই। তারা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিলে খেলছে। তাদের বিচার হওয়া উচিত।’

গত রবিবার দুপুরে আলোচিত চিকিৎসক সাবরিনাকে তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test