E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৪ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা

২০২০ জুলাই ২২ ১৮:৫০:১১
৪ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার : ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম অংশে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এই নদীর পানি কুড়িগ্রাম অংশে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিপৎসীমার উপরে পানি বেড়েছে ৩০ সেন্টিমিটার।

বিপৎসীমার উপরে থাকা নদীগুলোর পানি অধিকাংশ জায়গায় বেড়েছে, কমেছে কম জায়গায়। এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

গত ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার নিচে নেমেছে দুটি নদীর পানি। সেগুলো হলো- তিস্তা (ডালিয়া অংশে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল) ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র (জামালপুর অংশে)। আর নতুন করে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ৪টি নদীর পানি। সেগুলো হলো- করতোয়া (চকরহিমাপুর অংশে বিপদৎসীমা অতিক্রম করেছে), আত্রাই (আত্রাই অংশে), তিতাস (ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে) ও সোমেশ্বরী (কলমাকান্দা অংশে)। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়া নদীর সংখ্যা ২টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯টিতে।

পাশাপাশি এই সময়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়া স্টেশনের সংখ্যা বেড়েছে ২টি। বর্তমানে ৩০টি স্টেশনে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বন্যাকবলিত জেলার সংখ্যাও। ২৪ ঘণ্টায় একটি বন্যাকবলিত জেলা বেড়ে বর্তমানে ১৭টিতে দাঁড়িয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বুধবার (২২ জুলাই) দুপুরে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উজান মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে এবং বালু নদীর ডেমরা পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।

অপরদিকে যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঢাকা জেলার আশেপাশে নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, নাটোর, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ি, শরীয়তপুর ও ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

এদিকে ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম অংশে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে, ঘাঘটের গাইবান্ধা অংশে ৪৮, করতোয়ার চকরহিমপুর অংশে ৩, ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়া অংশে ৪০, ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী অংশে ৫১, যমুনার ফুলছড়ি অংশে ৭৫, যমুনার বাহাদুরাবাদ অংশে ৮২, যমুনার সারিয়াকান্দি অংশে ৮৪, যমুনার কাজিপুর অংশে ৬৩, যমুনার সিরাজগঞ্জ অংশে ৬১, যমুনার আরিচা অংশে ৬০, গুড়ের সিংড়া অংশে ৭৪, আত্রাইয়ের বাঘাবাড়ি অংশে ৯৭, ধলেশ্বরীর এলাসিন অংশে ১০১, লাক্ষ্যার নারায়ণগঞ্জ অংশে ১০, কালিগঙ্গার তারাঘাট অংশে ৯৬, ধলেশ্বরীর জাগির অংশে ৭১, আত্রাইয়ের আত্রাই অংশে ৪, পদ্মার গোয়ালন্দ অংশে ১০৪, পদ্মার ভাগ্যকুল অংশে ৭৫, পদ্মার মাওয়া অংশে ৬৫, পদ্মার সুরেশ্বর অংশে ৩৫, সুরমার কানাইঘাট অংশে ৭৪, সুরমার সিলেট অংশে ৪, সুরমার সুনামগঞ্জ অংশে ৩০, পুরাতন সুরমার দিরাই অংশে ২৮, যদুকাটার লরেরগড় অংশে ৬৮, তিতাসের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে ৭, সোমেশ্বরীর কলমাকান্দা অংশে ২৭ এবং মেঘনার চাঁদপুর অংশে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সময়ে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের লরেরগড়ে ২৪২, লালাখালে ১৩৭, কুমিল্লায় ১০০, মহেশখোলায় ২৪০, ভাগ্যকুলে ১৩৩, রাঙ্গামাটিতে ৯৩, কক্সবাজারে ১৩৯, সুনামগঞ্জে ১২০ ও লামায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। একই সময়ে বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১১৭, জলপাইগুড়িতে ৬১ ও শিলংয়ে ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test