E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ

২০২০ নভেম্বর ০৫ ১৪:৪০:২১
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ

স্টাফ রিপোর্টার : তাৎক্ষণিকভাবে শহর কিংবা গ্রামে সর্বত্রই টাকা পাঠানোর সুবিধার কারণে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিকাশ, রকেট, শিওর ক্যাশ ও নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের ওপর মানুষের নির্ভরশীলতা অনেক বেড়েছে। এছাড়া এমএফএসে নিয়মিত যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সেবা। ফলে প্রতিদিনই মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বাড়ছে গ্রাহকের সংখ্যা, সেই সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ।

বর্তমানে দেশে মোট ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৪৮ জন। সেই সঙ্গে সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয়েছে ৪৯ হাজার ১২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা। এক মাস আগেও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) সেপ্টেম্বরের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা যায়। তবে এ প্রতিবেদনে ডাক বিভাগের ‘নগদ’ এর তথ্য নেই।

এমএফএস এর তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন ও গ্রাহক সংখ্যার সঙ্গে সেবায় সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যাও বেড়েছে। আলোচিত সময়ে এমএফএস সক্রিয় গ্রাহক এক মাসের ব্যবধানে ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ৩৫ জন। এ সময় মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ১৭ হাজার ৫৫ জন।

সার্বিক বিষয়ে এমএফএস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ এর হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘সব সময় ঈদের মাসে মোবাইল ফাইন্যান্সের লেনদেন বাড়ে। তার পরের মাসে লেনদেন কিছুটা কমে যায়। এরপর ধীরে ধীরে কয়েক মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যায়। কিন্তু এবার এটা দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে লেনদেন আগের অবস্থানে চলে এসেছে। এর কয়েকটা কারণ রয়েছে।’

‘এর মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সাধারণ মানুষ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে বেশি পরিচিত হয়েছে। এছাড়া মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন সেবা যুক্ত করেছে। যেমন- ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন সহজ ও আকার বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে ছয় থেকে সাতটা ব্যাংক বিকাশ লেনদেন করতে পারত; এখন ২০ এর বেশি ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করতে পারে। বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল ও সেবার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। প্রবাসীরা সহজে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারছে। সরকারি বিভিন্ন ভাতা ও আর্থিক সুবিধা মোবাইলে পরিশোধ করা হচ্ছে। এসব কারণে লেনদেন বেড়েছে। আগামীতে সেবার মান আরও উন্নত হবে এবং লেনদেনও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক থেকে মোবাইলে ও মোবাইল থেকে ব্যাংকেও লেনদেন করার সুবিধাও পাচ্ছে গ্রাহকরা।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে এমএফএসে রেমিট্যান্স সংগ্রহ বেড়েছে ৫ শতাংশ। এ সময় রেমিট্যান্স এসেছে ১১০ কোটি ১০ লাখ টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ১৪ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ ৮৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৯৩৭ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে এক হাজার ২৯২ কোটি টাকা।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test