E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

হবিগঞ্জে তাণ্ডব : পুলিশের মামলায় হতাশ মানুষ, বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি 

২০২১ এপ্রিল ২৩ ১৮:২৮:৪১
হবিগঞ্জে তাণ্ডব : পুলিশের মামলায় হতাশ মানুষ, বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি 

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : দৈনিক আমার হবিগঞ্জ অফিস ও কয়েকটি হিন্দু বাসাবাড়িতে হামলা লুটপাট চলাকালে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে হবিগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেছে পুলিশ। ওই মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামির তালিকায় রয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মুহিবুর রহমান মাহি, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন কলি, পৌর আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক ফজলে রাব্বি রাসেল, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও  আমার হবিগঞ্জের বিশেষ প্রতিনিধি মহিবুর রহমান সানি প্রমুখ।

পুলিশের ওই মামলা নিয়ে হবিগঞ্জে বইছে সমালোচনার ঝড়। দারুণ হতাশ হয়েছে সাধারণ মানুষ। হামলার নেতৃত্বদানকারী হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম এবং দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার অফিস ও বেশ কয়েকটি হিন্দু বাড়িতে হামলা ভাঙচুর লুটপাট ঘটনার সংগঠক যুবলীগ নেতা শাহ আরজুর নাম নেই ২২ আসামির তালিকায়। অথচ হামলা চলাকালে শুধুই আত্মরক্ষার চেষ্টাকারী সাংবাদিক ও তাদের স্বজনদের আসামি করা হয়েছে ওই মামলায়। অবশ্য পুলিশ আশ্বস্ত করেছেন, তদন্তে যাদের নাম আসবে তাদেরকেও ছাড় দেওয়া হবে না।

ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবলীগের কর্মী রাসেল বিন এবং পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও আমার হবিগঞ্জের বিশেষ প্রতিনিধি মহিবুর রহমান সানিকে বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ম্যাজিষ্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম ওই দুজনকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

মামলার বাদি এসআই আব্দুর রহিম এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বিগত এক বছর ধরে হবিগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমার হবিগঞ্জে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মানহানিকর ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করছে। তাই পত্রিকা বন্ধের দাবিতে গত ১৯ এপ্রিল বেলা ২ টায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

মানববন্ধন থেকে এক পর্যায়ে পত্রিকা অফিস ও সম্পাদকের শ্বশুরের বাসা মঞ্জুরী ভবনের সামনে জড়ো হয় মানববন্ধনে অংশ নেওয়া লোকজন। এ সময় পত্রিকার সম্পাদক সুশান্ত দাশ গুপ্ত ও তার সহযোগীদের সাথে বিক্ষোভকারীদের তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গেলে ওসি মাসুক আলীসহ ১১জন পুলিশ সদস্য আহত হন। আর ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে দায়ের করা পুলিশের মামলায় উভয় পক্ষের লোকজনকে আসামীভুক্ত করা হয়েছে।

হবিগঞ্জের তাণ্ডব ও পুলিশের দায়ের করা মামলা নিয়ে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের পক্ষে কথা বলা হয় সেখানকার এক আওয়ামীলীগ নেতার সাথে। তিনি নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ৭১কে বলেন, তাণ্ডবের ঘটনার নেপথ্যে একজন প্রভাবশালী এমপি রয়েছেন। সবাই দেখেছেন, ওই ভয়ঙ্কর তাণ্ডবে নেতৃত্ব দিয়েছেন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম। আর সেই তাণ্ডব সংগঠিত করেছিলেন যুবলীগ নেতা শাহ আরজু। অথচ পুলিশের মামলায় তাদের আসামি করা হয়নি। আর দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকা তো অনিয়ম অসঙ্গতির খবর প্রচার করেছে। সেসব তো বস্তুনিষ্ঠ খবর।

যদি ধরেও নেই, ওই খবর সঠিক নয়, তাহলে পত্রিকার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতো। আইনি পথে না গিয়ে হামলা ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনাই প্রমাণ করে, দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় প্রকাশ পাওয়া অনিয়ম অসঙ্গতির খবর বস্তুনিষ্ঠ। প্রবীন ওই আওয়ামীলীগ নেতা আরও বলেন, পুলিশের দায়ের করা মামলার বিবরণ পড়লেই স্পষ্ট বোঝা যায়, পুলিশ প্রভাবশালীদের স্বার্থ রক্ষা করছেন এবং দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকাটিকে প্রতিপক্ষ করেছেন। এই অবস্থায় পুলিশের কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাওয়া অসম্ভব। সবশেষে তিনি সেদিনের হবিগঞ্জের ভয়ঙ্কর তাণ্ডবের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল শাহ আরজু নামে এক যুবলীগের নেতা ফেসবুকে আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার বিরুদ্ধে ১৯ এপ্রিল মিছিল ও মানববন্ধন আহবান করেন। হামলাকারীরা ওই দিন চিড়াকান্দি আবাসিক এলাকায় দৈনিক আমার হবিগঞ্জ অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরা পত্রিকা সম্পাদকের শ্বশুরের বাসা মঞ্জুরী ভবনের ৬টি ফ্ল্যাটে ব্যাপক হামলা ভাঙচুর লুটপাট চালায়। এখনো হবিগঞ্জ শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

(পিএস/এসপি/এপ্রিল ২৩, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test