E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নারীর অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে নির্যাতন ও সহিংসতা

২০২১ নভেম্বর ২৫ ১৮:৫৪:৪৭
নারীর অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে নির্যাতন ও সহিংসতা

স্টাফ রিপোর্টার : নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন ও বাল্যবিয়ে তাদের অধিকারের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ, যা নারীকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। নির্যাতন ও সহিংসতা নারীদের শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সব ধরনের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং লোকাল কনসালটেটিভ গুপ অন উইমেন অ্যাডভ্যান্সমেন্ট অ্যান্ড জেন্ডার ইক্যুয়ালিটির যৌথ আয়োজনে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ১৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশের সরকারের একার পক্ষে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা সম্ভব নয়। নারী নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ করতে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যম সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই সবার সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা নারী ও শিশুর প্রতি সব ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতামুক্ত দেশ ও পৃথিবী প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।

তিনি বলেন, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ করতে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত, সহিংসতা প্রতিরোধ এবং আইনি সহায়তা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে। এ লক্ষ্যে সরকার পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন, যৌতুক নিরোধ আইন, ডিএনএ আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন-২০২০ প্রণয়ন করেছে। সংশোধিত শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড’ করা হয়েছে। আইনের কঠোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডিএনএ প্রোফাইলিং ও স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আন্তঃমন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটিগুলো পুনর্গঠন ও সক্রিয় করা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রয়োজন নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে যুগোপযোগী বিভিন্ন আইন, নীতি ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে ইউএন রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর মিয়া সেপ্পো বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এজন্য কার্যকর কর্মপরিকল্পনা, মাল্টিসেক্টোরাল অ্যাপ্রোচ ও পর্যাপ্ত অর্থায়ন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রাপ পিটারসেন বলেন, ডেনমার্ক সরকার বিগত একুশ বছর ধরে বাংলাদেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। নারী নির্যাতন ও সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, সেল ও ট্রমা হেল্প সেন্টারকে উত্তম চর্চা হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ অনুসরণ করছে।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা প্রদান করেন ইউএসএইডের মিশন ডিরেক্টর ক্যাথারিন ডি স্টিভেন্স, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন চার্লস হোয়াইটলি ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন। স্বাগত বক্তব্য দেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাল্টিসেক্টোরাল প্রোগ্রামের পরিচালক এ কে এম শামিম আক্তার।

জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে এবারের প্রতিপাদ্য ‘নারী নির্যাতন বন্ধ করি, কমলা রঙের বিশ্ব গড়ি’। ১৬ দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ন্যাশনাল ডায়ালগ, সেমিনার ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test