E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গরুর কাটতি শুরু হবে শুক্রবার থেকে

২০১৪ অক্টোবর ০৩ ০৮:২৬:৩৩
গরুর কাটতি শুরু হবে শুক্রবার থেকে

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : রাজধানীর হাটগুলো কোরবানির পশুতে ভরে গেছে। প্রায় সবগুলো হাটে নির্দিষ্ট জায়গা পেরিয়ে আশপাশের জায়গাতেও রাখা হয়েছে গরু, মহিষ ও ছাগল। গাবতলীসহ আরও কয়েকটি হাটে উট এবং দুম্বাও উঠেছে বিক্রির জন্য। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গরুর শিং ও কুঁজো সাজানো হয়েছে রং-বেরংয়ের মালায়। গলাতেও শোভা পাচ্ছে কাগুজে ফুলের মালা। কোনো কোনোটির বাহারি নামও রাখা হয়েছে। মি. ডলফিন, কালা পাহাড় এবং বিগ এলিফেন্টসহ আরও কত নাম! দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এভাবে নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও হাটে ক্রেতাদের আগমন খুবই কম। যারা আসছেন তারাও গরুর দাম বেশি দেখে চলে যাচ্ছেন দরদাম করেই। বিক্রি হচ্ছে খুব কম।

তবে এতে হতাশ নন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, ‘গরুর কাটতি শুরু হবে আজ (শুক্রবার) থেকে। আর সর্বাধিক বিক্রি হবে শনি ও রবিবার।’ আর ক্রেতারা বলছেন, ভারতীয় গরু কম থাকায় বেপারীরা বেশি দাম হাঁকছেন। তাদের আশঙ্কা, ভারতীয় গরু না আসলে বেপারীরা গরুর দাম ছাড়তে চাইবেন না। ফলে এবার উচ্চ দামে গরু কিনতে হবে।

রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুরহাট গাবতলীতে গিয়ে দেখা গেল, গরুর দিকে ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে কিছু বড় গরু আলাদা শামিয়ানার নিচে রাখা হয়েছে। যশোর থেকে আসা গরু বেপারী হাসমত আলী একটি গরু নিয়ে এসেছেন। গরুর নাম রেখেছেন মি. ডলফিন। গরুর গায়ে তেল মেখে চকচকে করে রাখা হয়েছে ক্রেতাদের আকর্ষণ সৃষ্টি করতে। এ গরুর দাম হাঁকা হয়েছে সাড়ে চার লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। হাসমত আলী মনে করেন, তিনি তার কাঙ্ক্ষিত দামেই বিক্রি করতে পারবেন মি. ডলফিনকে।

এদিকে গরুর হাটে সবকিছু ছাপিয়ে ভারতীয় গরু আমদানি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। গরু বিক্রেতারা আশঙ্কা করছেন, যদি এখন বাজারে ভারতীয় গরু আসে তবে গরুর ব্যবসায় বড় ধরনের মার খেতে হবে। শনির আখড়া হাটে আসা ফরিদপুরের গরু ব্যবসায়ী ফেরদৌস আলম বলেন, রাজধানীতে সাধারণত গরু বিক্রি হয় ঈদের দুয়েকদিন আগে। সেই হিসেবে আগামী দুই/তিন দিন গরুর কাটতি থাকবে অনেক বেশি। এসময় যদি ভারতীয় গরু এসে যায় তবে দেশি গরুর বিক্রেতারা মাঠে মারা পড়বে।

রাজধানীর পশুর হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত গরুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এরপরও গরু আসছে। গরুভর্তি ট্রাক অপেক্ষায় আছে গরু নামানোর জন্য। তাই সঙ্কটের কোনো আশঙ্কা নেই। ইজারাদাররা বলছেন, এখনও বেশ কিছু গরুর ট্রাক পথে আটকে আছে। আজ ও শনিবারও হাটে গরু আসবে। তাই সঙ্কটের কোনো আশঙ্কা নেই। তবে ক্রেতারা বলছেন, এই দু’দিন গরু বিক্রির হিড়িক পড়ে যাবে। তখন গরুর সরবরাহ ভালো না থাকলে দাম বেড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ভারতীয় গরু আসলে বাজারে গরুর দাম মানুষের নাগালের মধ্যে থাকবে।

গরু বেপারী শাহি নূর হোসেন বলেন, ‘পাবনা থেকে গরু নিয়ে আসতে পথে গরু প্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়েছে। গাড়ি ভাড়াও অনেক বেশি। তাছাড়া পাঁচ দিন গরু নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করলে অনেক খরচ। এসব হিসাব করেই গরু বিক্রি করতে হবে।’ গত বছর গরু ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ বছরও যদি লোকসান হয় তবে বড় ধরনের সমস্যায় পড়বো। কারণ ঋণ করে গরু কিনে এনেছি। লোকসান হলে জমি বিক্রি করে ঋণের টাকা ফেরত দিতে হবে।’

জানা গেছে, এবার গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে ১৮টি হাট বসেছে। নিয়ম অনুযায়ী আজ শুক্রবার থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত হাট বসার কথা থাকলেও বুধবার থেকেই হাট বসতে শুরু করেছে। তবে আগে থেকে হাট বসলেও সেভাবে বিক্রি নেই। গরু ব্যবসায়ীরা বসে আছেন ক্রেতাদের আগমনের আশায়। এদিকে হাটগুলোতে পুলিশ থাকলেও এখনও কিছু হাটে জাল নোট শনাক্তকরণের মেশিন বসেনি। এতে গরু বিক্রেতারা অসন্তুষ্ট। তবে ইজারাদাররা বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী শুক্রবার থেকেই জাল নোট শনাক্তকরণের মেশিন বসানো হবে।

(ওএস/অ/অক্টোবর ০৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test