E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পুঁজিবাজারে কারসাজি, ফালুকে ১ কোটি টাকা জরিমানা

২০১৪ অক্টোবর ৩০ ০৯:৫৪:২৫
পুঁজিবাজারে কারসাজি, ফালুকে ১ কোটি টাকা জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার :পুঁজিবাজারে কারসাজিতে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে এক কোটি টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।

২০১০ সালের শেষে পুঁজিবাজারে ধস নামলে কারসাজির অভিযোগ তুলে বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা রাজপথে নেমে মতিঝিলে বিক্ষোভ-ভাংচুর চালায় ।

ওই পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার ধস তদন্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে।

কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আরও তদন্ত চালিয়ে মোসাদ্দেক আলী ও গোলাম মোস্তফার কারসাজি ও সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় তাদের জরিমানা করা হয়েছে বলে বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

মোসাদ্দেক আলী ও গোলাম মোস্তফার আনইউজুয়াল ম্যানিপুলেটিভ শেয়ার ট্রানজেকশনের বিরুদ্ধে ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগ আনা হলে ওই অভিযোগের বিষয়ে দুইবার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হয় বলে জানিয়েছে বিএসইসি।

“কমিশনের তদন্তে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রমাণিত হয় যে মোসাদ্দেক আলী আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড ও বেক্সিমকো লিমিটেডের এবং গোলাম মোস্তফা ইষ্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, নাভানা সিএনজি, অলিম্পিক ইন্ডাষ্ট্রিজ, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, লংকা বাংলা ফাইন্যান্স এবং ফার্স্ট লীজ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের শেয়ারের অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে শেয়ার মুল্যকে প্রভাবিত করেন।”

তদন্তে প্রমাণ পাওয়ার পর মোসাদ্দেক আলী ও মোস্তফার বক্তব্য শুনতে তাকে শুনানিতে ডাকা হয় বলে বিএসইসি জানিয়েছে।

“শুনানিতে তারা তাদের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যা কমিশনের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। এজন্য কমিশনের প্রতিবেদনে আনা শেয়ার ম্যানিপুলেশনের অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা ভঙ্গের কারণে মোসাদ্দেক আলীকে এক কোটি টাকা এবং গোলাম মোস্তফাকে তিন কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।”

ওই সময় পুঁজিবাজার থেকে হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। মোসাদ্দেক আলীর দল বিএনপি দাবি করে, এই টাকার অঙ্ক ৮৪ হাজার কোটি টাকা।

বাজার থেকে অর্থ পাচারের বিষয়টি তদন্তে পাওয়া গেছে বলে কমিটির প্রধান ইব্রাহিম খালেদ তখন জানিয়েছিলেন। তবে তিনি বলেন, ওই অঙ্ক হতে পারে ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা।

পুঁজিবাজারের ওই ধসের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রায় সব পক্ষকেই (শেয়ার ইস্যুয়ার, ইস্যু ম্যানেজার, ব্রোকার, ডিলার, ব্যবসায়ী) দায়ী করেন এই ব্যাংকার।

ওই সময় মোসাদ্দেক আলীর সঙ্গে আরও কয়েকজনের নাম গণমাধ্যমে এসেছিল। তবে ইব্রাহিম খালেদ বলেছিলেন, তদন্ত কমিটি কয়েকজনের কাজে অসঙ্গতি পেয়েছে। তবে এর ভিত্তিতে কাউকে দোষী বলা যায় না।

ধসের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অদক্ষতাকে দায়ী করেছিল তদন্ত কমিটি। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে এসইসি পুনর্গঠন করে সরকার, নামও বদলে যায়। পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রণোদনামূলক নানা কর্মসূচিও নেয় সরকার।

নানা পদক্ষেপের পর পুঁজিবাজার আগের অবস্থায় ফিরে না গেলেও ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে

বিএসইসির বুধবারের সভায় আইপিও (প্রাথমিক গণ প্রস্তাব) ছাড়ার সময় অসত্য তথ্য দেওয়ায় আরও কয়েকটি কোম্পানি এবং নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।

তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক বিবরণীতে ইপিএস বেশি দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করায় শাহাজীবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (এসপিসিএল) প্রত্যেক পরিচালককে ১০ লাখ টাকা এবং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানিটির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসারের (সিএফও) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে তা কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে।

আইপিওতে আসার আগেই ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে (ইউপিজিসিএল) দুই লাখ টাকা এবং নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান হুদা চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানিকে দুই লাখ টাকা এবং ইস্যু ম্যানেজার লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ইনভেস্টসেমন্ট লিমিটেডকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি শেষ করে আইপিওর জন্য বিএসইসির কাছে যে প্রসপেক্টাস জমা দিয়েছে তাতে ক্যাস ফ্লো ফরম অপারেটিং এ্যাক্টেভিটিস শিরোনামে ইনকাম ট্যাক্স পেমেন্ট আউটফ্লো দেখানোর পরিবর্তে ইনফ্লো দেখিয়ে আবেদন করায় এই জরিমানা করা হয়েছে।

”(ওসএস/এসসি/অক্টোবর৩০,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test