E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

রিকশা চালক থেকে কোটিপতি

লালবাগে সোহরাবের ‘লাইসেন্সেই’ চলছে ব্যাটারিচালিত থ্রি হুইলার

২০২৪ মার্চ ০১ ১৬:৩৩:০৫
লালবাগে সোহরাবের ‘লাইসেন্সেই’ চলছে ব্যাটারিচালিত থ্রি হুইলার

মোহাম্মদ সজীব, ঢাকা : রাজধানীর লালবাগের বাসিন্দা সোহরাব। পেশায় রিকশা চালক হলেও টাকার বিনিময়ে দিচ্ছেন অটোরিকশা চালানোর ছাড়পত্র। তার দেয়া স্টিকার দিয়েই পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়কে চলছে অবৈধ যান তিন চাকার থ্রি হুইলার। এতে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তবে পুলিশ বলছে আমরা তদারকি করছি, প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছি।

জানা গেছে, রাজধানী হাজারীবাগ থেকে সেকশন ঢাল হয়ে কামরাঙ্গীরচর থেকে বাবুবাজার পর্যন্ত অলিগলিসহ প্রধান সড়কে অবাধে চলছে থ্রি হুইলার। মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে স্ট্যান্ড তৈরি করেছে এ যানবাহন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এসব চলছে শক্তিশালী সোহরাব সিন্ডিকেটের অধীনে।

সম্প্রতি চাঁদাবাজির মামলায় জেলও খেটেছেন তিনি। জামিনে বের হয়েই পুনরায় শুরু করেন চাঁদাবাজি। বর্তমানে আওয়ামী লীগের স্থানীয়নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে চালু করেন কার্ড বাণিজ্য। রিকশা চালক থেকে সোহরাব বনে গেছেন বড় ব্যবসায়ী। চাঁদার টাকায় করেছেন আলিশান বাড়ি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সোহরাব চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ হাজার রিকশা চালকের মাঝে কার্ড বিতরণ করেছেন। কার্ডে রয়েছে সোহরাবের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার। কার্ড প্রতি নিয়েছেন ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। এসব কার্ড পরবর্তী পুনরায় রিনিউ করতে হবে সমপরিমাণ টাকার বিনিময়ে। এ হিসাবে প্রতি মাসে কম করে হলেও ২০ লাখ টাকার চাঁদা আদায় হয়। যা বছরে আড়াই কোটি টাকা।

চালকরা জানান, সোহরাব নামের এক ব্যক্তির কাছে থেকে তাদের কার্ড নিতে হয়। পুলিশে ধরলে আম, কাঁঠাল, আনারস, আপেল, হরিনেরছবিযুক্ত এসব কার্ড দেখালেই অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালককে ছেড়ে দেন পুলিশ। একটি কার্ডের মূল্য ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা।

রিকশা চালকরা বলছেন, এই কার্ড দেখালে কোনো বাধা ছাড়াই রাস্তায় চলতে পারে এসব ‘অবৈধ যান’। আবার প্রতি মাসে তা রিনিউ করতে হয় সমপরিমাণ টাকা দিয়ে। যখন-তখন, যেখানে-সেখানে পার্কিং, বেপরোয়া চলাচল এবং খারাপ আচরণ সবই করে বেপরোয়া এসব অটোচালকরা। এতে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাও ঘটে।

রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার অলিগলিতে দিনকে দিন বেড়েই চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা। রাজধানীর পুরান ঢাকা, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, মাদারটেক, নন্দীপাড়া, বাসাবো, মুগদা, কদমতলা, বৌদ্ধমন্দির, বনশ্রী এলাকায় এই হার সবচেয়ে বেশি। মূলত জনসাধারণের সহজ ও কম ভাড়ায় যাতায়াতে সুবিধা দিয়ে থাকে এ অবৈধ যানটি। এ কারণে জনসাধারণ বিরক্ত হলেও কিছু বলতে চায় না। বেআইনি যানটি পুলিশি বৈধতা নিয়ে টিকে আছে রাজধানীহ সারা দেশে।

পুরান ঢাকার লোহার ব্রিজ এলাকায় দ্বায়িত্বরত ট্রাফিক ইনস্পেক্টর লোকমান হোসেন জানান, অবৈধ এসব যান ধরতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। আজকেও অভিযান অব্যহত রয়েছে ইতিমধ্যে ৩৬টা থ্রি হুইলার আটক করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাফিক লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) জয়ীতা দাস বলেন, সড়ক শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা সবসময় চেষ্টা করছি। সোহরাবের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে একাধিক অভিযোগ ছিলো। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। পরে সে আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া পেয়েছে। তবে অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার অটোরিকশা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ ধরনের গাড়ি নির্মাণ আমদানি ক্রয়-বিক্রয় বন্ধের নির্দেশ রয়েছে হাইকোর্টের আদেশে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০১, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test