E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফর পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষার পদক্ষেপ

২০২৪ মার্চ ০৫ ২০:০০:৩২
মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফর পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষার পদক্ষেপ

বিশেষ প্রতিনিধি : নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যেকোন বিভেদকে সরিয়ে বাংলাদেশের সাথে বৃহত্তর সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে দেখতে পাচ্ছেন কূটনীতিক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক উন্নয়নের সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পারস্পরিক স্বার্থের অগ্রগতির জন্য একটি যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনাও করেন তারা। ওই সফরের বিশ্লেষণ নিয়ে সংবাদ ও বিশ্লেষণভিত্তিক ওয়েবসাইট ইউরেশিয়া রিভিউয়ে প্রকাশিত নিবন্ধে এসব দাবি করা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, মার্কিন রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারী এবং ইউএস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলে দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র ডিরেক্টর ইলিন লবাচার, ইউএসএইড এশিয়ার ব্যুরোর সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার উপ-সহকারী সচিব আফরিন আক্তারের ওই সফরে জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য গতিশীলতা, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি, মিয়ানমার ইস্যু এবং শ্রম অধিকারের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে। মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক রিজিয়নের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন তারা। দুই দেশের এই অংশীদারিত্বের মধ্যে রয়েছে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার চেষ্টা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই, আন্তঃজাতিক হুমকির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সহনশীলতা বৃদ্ধি করা এবং অর্থনৈতিক সংস্কার। সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধি দল ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে স¤পর্ক এগিয়ে নিতে বিভিন্ন সেক্টর থেকে সম্পৃক্ততার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

সফরের সময়, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ইন্দো-প্যাসিফিক রিজিয়নে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের তাৎপর্য তুলে ধরে ফেসবুক পোস্টও দিয়েছে। ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে দেয়া ওই পোস্টে, দূতাবাস জানিয়েছে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শরণার্থী ইস্যু, জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রম অধিকার এবং বাণিজ্য সহ পার¯পরিক স্বার্থে দুই দেশ সহযোগিতা করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে।

‘ইমপ্লিকেশনস অব ইউএস ডেলিগেশন’স ভিজিট টু ঢাকা স্ট্রেংথেনিং বাংলাদেশ-ইউএস রিলেশনস’ শিরোনামে সৈয়দ রায়ান আমিরের ওই লেখায় বলা হয়েছে, অর্থনীতির দিক থেকে বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী এবং পরস্পর নির্ভরশীল সম্পর্কে জড়িত। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০২২ সালে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ ২০২২ অর্থবছরে ৩.৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট পেয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ছিল ১০.৪২ বিলিয়ন ডলার। এটি মোট রপ্তানি আয়ের ১৭.৫৭%। বাণিজ্যের এই ঊর্ধ্বগতি যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত করেছে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির শীর্ষ গন্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালে মোট ৪৬.৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। আমাদের জ্বালানি খাতে বৃহত্তম বিনিয়োগকারী, তৃতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার এবং তৈরি পোশাক পণ্যের একটি মূল বাজার হিসাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে সৈয়দ রায়ান আমিরের ওই লেখায় উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামগ্রিক এফডিআই-এর প্রাথমিক উৎস। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ১৫বিলিয়ন ডলারের একটি নতুন তহবিল গঠনে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

লেখায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠির বিষয়বস্তুকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে বাংলাদেশ। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চিঠিকে ঘিরে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test