E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুন্দরবনে সনাতন পদ্ধতিতে তেল অপসারণ শুরু

২০১৪ ডিসেম্বর ১২ ১৬:৪৩:৩২
সুন্দরবনে সনাতন পদ্ধতিতে তেল অপসারণ শুরু

বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া ফার্নেস অয়েল এখন ‘থালা-বাসন, ফোম ও কলা পাতা’ দিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে অপসারণের কাজ শুত্রুবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। সুন্দরবন সন্নিহিত লোকালয়ের মানুষ ও জেলে-বনজীবীরা এভাবেই শ্যালা নদীসহ খাল থেকে তেল অপসারণের  কাজ শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন সংলগ্ন লোকালয়ে মাইকিং করে ভাসমান তেল তুলে নেয়ার আহবান জানানো হয়। সকাল থেকে শুরু হয় তোড়জোড়। তারা তেল সংগ্রহের পর পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে লিটার প্রতি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করছে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি সুন্দরবন থেকে এর আগে তেল কেনার ঘোষণা দিলে এগিয়ে আসে সাধারণ মানুষ। ভাসমান তেল সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া রোধে ও তেল তোলার সুবিধার্থে জোয়ারের সময় খালগুলোতে ফার্নেস অয়েল যাতে বের হতে না পারে সে জন্য বৃহস্পতিবারই খালগুলোর মুখে নেট দিয়ে ব্যরিকেট দেয়া হয়।

এদিকে কান্ডারি-১০ এসে পৌঁছালেও সেটি কখন থেকে রাসায়নিক ছিটানোর কাজ শুরুর জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। এব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু.শুকুর আলী। আপাতত ডিসপারসেন্ট ফোম কেমিকেল ছিটানোর কাজ বন্ধ রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দোহা খন্দকার জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তিন দিন বন সংলগ্ন লোকালয়ের মানুষের সহায়তা নিয়েই তেল সংগ্রহের চেষ্টা করা হবে। পরে রাসায়নিক ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

এদিকে, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারর্বার মাস্টার কে এম আকতারুজ্জামান জানান, ডুবে যাওয়া ট্যাংকারে ছিল প্রায় সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল। কান্ডারিতে মাত্র ১০ হাজার লিটার তেলের তেজস্ক্রিয়তা কমানোর মতো রাসায়নিক রয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্ব সুন্দরবনের শ্যালা নদীর চাঁদপাই রেঞ্জের মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় ‘ওটি সাউদার্ন স্টার সেভেন’ নামে একটি তেলবাহী ট্যাংকার মঙ্গলবার ভোরে ডুবে যায়। ট্যাংকারটি গোপালগঞ্জের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য খুলনার পদ্মা অয়েল ডিপো থেকে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৮ লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে যাচ্ছিল। এ ঘটনায় ট্যাংকারের মাস্টার মোকলেসুর রহমান (৫০)এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

ওই তেল পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। বিশেষ করে জোয়ারে তেলযুক্ত পানি বনে প্রবেশ করায় গাছের গোড়ায় ও শ্বাসমূলে তেলের আবরণ লেগে যাওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। পানিতে বিলুপ্ত প্রায় ইরাবতি ডলফিনসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন ও ৩শ’ প্রজাতির মৎস্য সম্পদসহ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের অস্তিত্ব ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এদিকে সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্যসহ ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে ৯ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি শস্তিশালী গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ১২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test