E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

স্বাগত ২০১৫

২০১৫ জানুয়ারি ০১ ০৯:৪৯:৪০
স্বাগত ২০১৫

অনিক তরফদার : সুদূর অতীতে গ্রীসের মানুষ অস্তপ্রায় লাল সূর্যকে জীর্ণ জীবনের প্রতীক হিসেবে বিদায় জানাত। সমুদ্র মায়ের কোলে বিলোপ হওয়া ক্লান্ত সূর্যের আবার পুনর্জন্ম পরদিন ভোরে সেই সমুদ্রের গর্ভ থেকেই। এভাবেই বেজে চলেছে বিলয় ও সৃষ্টি, বিদায় ও বরণের সুর। এভাবেই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ২০১৪ সালের শেষ পাতাটি 'কালের যাত্রা'য় হারিয়ে গেল ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টার ঘর ছোঁয়ার সাথে সাথেই। বিদায় ২০১৪। স্বাগত ২০১৫ সাল। শুভ নববর্ষ।

আজ ১ জানুয়ারি। ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন। ২০১৪ সালের শেষ সুর্যের রক্তিম আভা মিলিয়ে গিয়েছে, শীতের ঘন কুয়াশা ভেদ করে পূব আকাশে উদিত নতুন ভোরের সূর্য আলো ছড়াবে দিগন্তজুড়ে। নতুন বছরের অপার সম্ভাবনা নিয়ে উদীত এ সূর্যের আলোতে আলোকিত হবে একটি নতুন দিন, একটি নতুন বছর। পুরোনো জরা-গ্লানি-হতাশাকে পেছনে ফেলে আবারও নতুন সম্ভাবনা আর স্বপ্নের প্রতীক্ষায় প্রস্তত বিশ্ববাসী।

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের উৎস হলো আদি রোমান ক্যালেন্ডার। আদি রোমান ক্যালেন্ডার চালু হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে। তখন ক্যালেন্ডারে ছিল মাত্র ১০ মাস। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি ছিল অনুপস্থিত। খিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীরই শেষদিকে এসে রোমান ক্যালেন্ডারে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি যুক্ত হয়। তবে প্রথমদিকে জানুয়ারি ছিল এগারোতম মাস। খিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে জানুয়ারিকে বছরের প্রথম মাস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

খিস্টপূর্ব ৪৫ সালে গ্রিক জ্যোতির্বিদ সোসিজেনাসের পরামর্শে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার রোমান ক্যালেন্ডারে কিছু পরিবর্তন এনে ‘জুলিয়ান ক্যালেন্ডার’ প্রবর্তন করেন। বর্তমানে আমরা যে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার করি, সেই ক্যালেন্ডারের মাসগুলোর বিন্যাস ও সপ্তাহের দিনগুলোর বিন্যাস এসেছে ওই জুলিয়ান ক্যালেন্ডার থেকেই। ১৫৮২ সালে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে সামান্য পরিবর্তন এনে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন।

নগর সংস্কৃতিতে বিশেষ করে তরুণ সমাজের কাছে ইংরেজী নববর্ষের আবেদন অনেক। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই রাত ১২টা এক মিনিটে তারুণ্যের আবেগ ও উচ্ছ্বস নিয়ে বর্ষবরণ নাগরিক সংস্কৃতির বাহন হয়ে উঠেছে। আমাদের গ্রামীন আর্থ সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিসরে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব কম। তবে আমাদের জাতীয় জীবনে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রভাব ব্যাপক।

বিদায়ী ২০১৪ সালের কষ্ট, বঞ্চনা, হতাশা পেছনে ফেলে ভালো কিছু প্রাপ্তির স্বপ্ন নিয়ে দেশের মানুষ শুরু করছে নতুন বছর। সর্বব্যাপী অনিশ্চয়তা, অজানা উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা ও হরতালের মধ্য দিয়ে আগমন হচ্ছে নতুন বছরের।

এ দেশের আশাবাদী মানুষেরা মনে করছে সব ধরনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনবে অনাবিল আনন্দ। দেশে ফিরে আসবে শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বস্তি ও গতিময়তা। নতুন আশার আলো প্লাবিত করবে বাংলাদেশের দিগন্ত। নতুন বছরে সবার প্রত্যাশা এমনই। সবার জন্য ২০১৫ সালটি শুভ ও মঙ্গলময়।

(ওএস/এটিআর/জানুয়ারি ০১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test