E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগে বিশ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ

২০১৫ সেপ্টেম্বর ১২ ১৫:০৪:১২
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগে বিশ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগ বিগত অর্থ বছরে যাত্রী, পার্সেল ও মালামাল বহন খাতে অতিরিক্ত প্রায় ৬১ কোটি টাকা আয় করেছে। যা বিগত বিশ বছরের আয়ের সর্বাধিক।

রেলওয়ে পাকশী বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, পশ্চিমাঞ্চল জোনের জিএম খায়রুল আলম ও পাকশী বিভাগের ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেনের ব্যবস্থাপনা, নির্দেশনা, ও নিয়মিত মনিটরিং এর কারণে বিশ বছরের মধ্যে সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। রেলওয়ের আয় বাড়লেও যাত্রী সেবার মান ন্যুনতম পরিমাণে বাড়েনি বলে ট্রেনে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে।

রেল সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে যাত্রী বহন খাতে ১’শ ৩৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, পার্সেল বহন খাতে ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, মালামাল বহনে ৪৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা ও বিবিধ খাতে ৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা মিলে মোট ১’শ ৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা আয় অর্জিত হয়।

২০১৪-১৫ অর্থ বছরে যাত্রী বহন খাতে ১’শ ৪৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, পার্সেল বহনে ৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা,মালামাল বহন খাতে ৯৩ কোটি ১০ লাখ টাকা ও বিবিধ খাতে ৪ কোটি ৭ লাখ টাকা । সর্বমোট ২’শ ৫২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আয় করা করেছে। প্রায় ৬১ কোটি টাকা আগের অর্থ বছর হতে অতিরিক্ত আয় অর্জিত হয়েছে।

পাকশী বিভাগের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আফজাল হোসেন জানান, স্টেশন বন্ধ থাকা, ঢাকামুখি ট্রেনে চাদিা মাফিক কোচ সংযোজন করতে না পারা, চালক (এলএম) ও গার্ড সংকট থাকার পরও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালনের কারণে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে এই অতিরিক্ত আয় অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। যদি প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্টেশন চালু, ঢাকাসহ দূরপাল্লার ট্রেনে আরও কোচ সংযোজন, চালক (এলএম) ও গার্ড সংকট না থাকতো তাহলে আরও বেশি আয় অর্জিত হতো বলে তিনি জানিয়েছেন। এদিকে রেলওয়ের আয় বাড়লেও যাত্রী সেবার মান আরো নীচে নেমে গেছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে।

ট্রেনে চলাচলরত যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানাা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় লোকজন এখন ট্রেনে চলাচল নিরাপদ বলে মনে করেন। ট্রেনে বিনা টিকিটের যাত্রীর সংখ্যাও এখন অনেক কম। চাহিদা থাকা স্বত্বেও সবকটি ট্রেনে কোচের সংখ্যা সীমিত। যাত্রীরা সীট নম্বর না পেলেও দঁড়িয়েই চলাচল করছে। তবে রেলওয়ের ষ্টাফ পরিচয়ে বিনা টিকিটের যাত্রীদের কারণে টিকিটের যাত্রীরা নাজেহাল হচ্ছে। ষ্টাফদের জন্য পাস-এর ব্যবস্থা থাকলেও অনেকেই পাস গ্রহন না করে ট্রেনকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করেন বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন।

এছাড়া ট্রেনের টয়লেটগুলোর বেহাল অবস্থা। শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কোচের সংখ্যাও অতি নগণ্য। দূরপাল্লার ট্রেনগুলোর ষ্টপেজ ষ্টেশনের সংখ্যা বেশী থাকায় চার ঘন্টার পথে সময় লাগে ছয় ঘন্টা। এব্যাপারে রেল সূত্র জানায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ ষ্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেন ষ্টপেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশিরভাগ ট্রেনই বিলম্বে চলাচল করায় যাত্রীরা চরম বিড়ম্বনার মধ্যে চলাচল করছেন।

রেল কর্তৃপক্ষ লোকবলের অভাবে ষ্টেশন বন্ধ থাকাকে প্রধান কারণ বললেও দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও এজন্য দায়ী বলে জানা গেছে। ক্রসিং দেয়ার ক্ষেত্রে অপরিকল্পিত ভাবে ষ্টেশন নির্ধারণ ও সময় সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে অনেক ট্রেনকে ষ্টেশনে থামিয়ে রেখে বিলম্বের মাত্রা বাড়ানো হয়। এত যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বন্ধ করে নতুন লোক নিয়োগদান করা হলে রেলের আয় আরো বাড়বে। কোচ সংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত জনবল নিয়োগ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি ও যাত্রী সেবার মানের দিকে নজর দেয়া হলে রেলওয়ের আয় দ্বিগুণ-ত্রিগুণ পরিমান বৃদ্ধি পাবে।

(এসকেকে/এএস/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test