E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আজ বড়ইতলা গণহত্যা দিবস

২০১৫ অক্টোবর ১৩ ১৪:৩৬:০৫
আজ বড়ইতলা গণহত্যা দিবস

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : মহান মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার জন্য জীবন দিতে হয়েছে এ দেশের ৩০ লক্ষ মানুষকে। দেশের অগণিত বধ্যভূমি ঘাতকদের বর্বরতার চিহ্ন বহন করছে এখনো। তেমনি এক বধ্যভূমি কিশোরগঞ্জের বড়ইতলা।

১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর এই বড়ইতলায় ৩৬৫ জন নিরীহ মানুষ স্বাধীনতার বেদীমূলে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বর্তমানে দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলছে। তবে বরইতলার হত্যাকারীদেরকে এই বিচারের আওতায় আনা হয়নি আজো। মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাসিন্দারা ঘাতকদের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কর্শাকড়িয়াইল ইউনিয়নের চিকনিরচর গ্রামের লাল মামুদ বরইতলা হত্যাকাণ্ডে তার চাচা ও দুই চাচাতো ভাইকে হারিয়েছেন। এ ঘটনায় আহত অবস্থায় বেঁচে গেছেন তার অপর তিন আত্মীয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ ৪৪ বছর পরও ঘাতকদের বিচার না হওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ। বড়ইতলা হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি একটি পুঁথি রচনা করেছেন। যা প্রায়ই তিনি এলাকায় গেয়ে শোনান। বিশেষ করে অক্টোবরের ১৩ তারিখ এলে তিনি সহজে স্থির থাকতে পারেন না।

কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে চলে গেছে কিশোরগঞ্জ-নিকলী সড়ক। এ সড়কের পাশেই বড়ইতলা ময়দান। বড়ইতলার পাশেই মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের বাড়ি। ফলে হানাদার ও রাজাকারদের শ্যেন দৃষ্টি পড়ে এলাকাটির উপর। ১৩ অক্টোবর স্থানীয় রাজাকারদেপ এখানে চালায় নির্মম গণহত্যা। প্রায় চারশ গ্রামবাসীকে তারা প্রথমে বরইতলা মাঠে জমায়েত করে। পরে প্রত্যেককে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাদের কয়েকজন নামাজ পড়ার ওসিলায় স্থানীয় মসজিদে গিয়ে রক্ষা পান। এই মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসী বড়ইতলার নাম পাল্টে রাখেন শহীদ নগর। তখন এ স্থানটিতে অস্থায়ীভাবে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। পরে নাম-পরিচয় জানা শহীদদের নাম সংবলিত স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু অযত্ন ও অবহেলায় এই স্মৃতিস্তম্ভটিও ধ্বংসের পথে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের রয়েছে ক্ষোভ।

এলাকাবাসী বড়ইতলা গণহত্যার জন্য স্থানীয় কয়েকজন রাজাকারকে দায়ী করেছেন। ঘাতকদের কেউ কেউ এখনো দুর্দণ্ড প্রতাপে এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, গণহত্যার শিকার শহীদ পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী ঘাতকদের বিচার দাবি করেছেন।

(পিকেএস/এএস/অক্টোবর ১৩, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test