E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে অভিভূত পর্যটন মন্ত্রীরা

২০১৫ অক্টোবর ২৯ ১৮:৩৯:৫৬
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে অভিভূত পর্যটন মন্ত্রীরা

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বিশ্বের বণ্যপ্রাণীর বৃহত্তর আবাসভূমি ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবনের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দার্য উপভোগ করে অভিভূত হলেন বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডাব্লুটিও) সেক্রেটারী জেনারেল তালেব রিফাইসহ এশিয়ার বৌদ্ধ হ্যারিটেজ সমৃদ্ধ ১২টি দেশের পর্যটন মন্ত্রী, সচিব ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এই প্রতিনিধি দলটি থেকে হ্যলিকপ্টার যোগে কক্রবাজার থেকে প্রথমে বাগেরহাটের বিএনএস মংলা নৌঘাটিতে অবতরন করে। বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলটি পরে মংলা নৌঘাটিতে থেকে ‘টাইগার ট্যুর’ নামের বিশেষ একটি পর্যটন জাহাজে করে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের হারবাড়িয়ায় যান। পরে তাঁরা সুন্দরবনের কমরজলে কুমির ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।

প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে টাইগার ট্যুর জাহাজের ডেকে বসে বিদেশী এসব অতিথিরা সুন্দরবনের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দার্য্য উপভোগ কালে সুন্দরবন বিষয়ক সব তথ্য মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন করেন সুন্দরবন খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক সুনিল কুমার কুন্ডু। এসময়ে তাঁদের জানানো হয়, পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ এই বন এখন ‘ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড’। প্রশাসনিক ভাবে পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগের ৪টি রেঞ্জের ৫৮টি কর্ম্পামেন্টে বিবক্ত বাংলাদেশের সুন্দরবন। দিন-রাত ২৪ ঘন্টায় সুন্দরবন প্রাকৃকিত ভাবে ৬ বার তার রূপ বদলায় এই সুন্দরবন।

শরণখোলা রেঞ্জের কটকা থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার রয়েছে অপূর্ব সুযোগ। সুন্দরবনে ১০৬টি বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, দেড় লাখ চিত্রল ও মায়া হরিণ, বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতিসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন ও দুই প্রজাতির তিমিসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ৩২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরিসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী ও পাখি রয়েছে ৩০০ প্রজাতির। ‘সুন্দরী’ ‘গেওয়া’ ‘পশুর’ ‘গরাণ’সহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে। জালের মতো করে ছড়িয়ে রয়েছে ৪৫০টি ছোট-বড় নদ-নদী ও খাল।

সুন্দরবনের এসব জলভাগে রূপালী ইলিশসহ ২১০ প্রজাতির মাছ, ২৬ প্রজাতির চিংড়ি, বিশ্বখ্যাত ‘শিলা র্স্কাস্প’সহ ১৩ প্রজাতির কাঁকড়া ও ৪২ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক। বন্যপ্রাণীসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে সুন্দরবনের সব সম্পদ আহরণ বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতি বছর দেশী-বিদেশী প্রায় দুই লাখ ইকো-ট্যুরিষ্ট (প্রতিবেশ পর্যটক) সুন্দরবনের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দার্য্য উপভোগ করতে এখানে আসেন।

সুন্দরবন সফরে ২০ সদস্যের এ প্রতিনিধি দলে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন’র সেক্রেটারি জেনারেল তালিব রিফাই,চীন, ভুটান, ভারত, কম্বোডিয়া, আফগানিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, জাপান, ভিয়েতনামের পর্যটন মন্ত্রী, সচিব, রাষ্ট্রদূত, বৌদ্ধ ধর্মও কৃষ্টি বিশেষজ্ঞগন ছিলেন।

দুই দিনের বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা বর্ননা করে জাতি সংঘের ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম ্অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারি জেনারেল তালিব রিফাই বলেন বাংলাদেশ সফরে তার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রনালয়, সচিবরা টেকসই উন্নয়নের প্রশ্নে আন্তরিক এবং তাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুন্দরবন পরিদর্শন শেষে দিগরাজ নৌঘাটিতে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন। তিনি সুন্দরবনের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দার্য্য উপভোগ করে অভিভূত হয়েছেন বলেও সাংবাদিকদের জানান।’

বৌদ্ধ পর্যটন সার্কেলের উন্নয়ন’ বিষয়ক দুই দিনের এক কর্মশালায় ঢাকায় আসা এই প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার সুন্দরবন ও কক্সবাজার পর্যটন এলাকা পরিদর্শন করেন। বিকেলে প্রতিনিধি দল ঢাকার উদ্দ্যেশে হ্যালিকপ্টার যোগে মংলা ত্যাগ করেন।

(একে/এএস/অক্টোবর ২৯, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test