E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাই আইন লঙ্ঘন করে বেশি’

২০১৬ এপ্রিল ০২ ১৪:০৪:৫৩
‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাই আইন লঙ্ঘন করে বেশি’

স্টাফ রিপোর্টার : গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাই আইন লঙ্ঘন করে বেশি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। ‘জননিরাপত্তা বিধানে গণমাধ্যম ও পুলিশের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের শীর্ষ সংবাদ কর্তারা অংশ নেন।

তিনি বলেন, শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ১৪ ফেব্রুয়ারি আন্দোলন করেছি। দেয়াল ভেঙেছি ছাত্র হয়ে। যে এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র হয়ে লড়েছি, তার অধীনেই কাজ করেছি। এটাই পেশাদারিত্ব। পুলিশ পরিবারের সদস্য হওয়ার আগে যে ধারণা ছিল পুলিশ সম্পর্কে তা আজ বদলে গেছে। আমরাই একসময় পুলিশকে ঠোলা বলতাম। আজ বুঝি এগুলো ঠিক নয়।

পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই- রাষ্ট্রের কাছে, জনগণের কাছে। মালিক যেন তার রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক কারণে গণমাধ্যম ব্যবহার করতে না পারেন। তিনি আরো বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাই আইন লঙ্ঘন করে বেশি। পুলিশ ইচ্ছা করলেই সব কিছু করতে পারে না। পুলিশের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আমাদের লক্ষ্য এবং গণমাধ্যমের লক্ষ্য একই। যদিও কর্মপদ্ধতি ভিন্ন। ফলে পুলিশ-গণমাধ্যমের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো হওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, পুলিশ এককভাবে জনগণের সন্তুষ্টি বিধান করতে পারবে না। এজন্য আমরা কমিউনিটি, সুশীল সমাজ ও সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছি।

মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়। এতে বলা হয়, গণমাধ্যম ও পুলিশের সম্পর্কের মধ্যে যতই টানাপোড়েন থাক না কেন তারা পরস্পরের পরিপূরক ও সহায়ক। ঢাকা মহানগরে ২৮৭ বিট আছে। বিট পুলিশিং কার্যক্রমের ফলে পুলিশের প্রতিটি এলাকা, এলাকার অপরাধ প্রকৃতি ও অপরাধী সম্পর্কে ধারণা বৃদ্ধি পাবে।

এতে ডিএমপির গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্ক, তথ্যের সংরক্ষণ ব্যবহার, ডিএমপির ডিজিটালাইজেশন বিষয়ে ডিএমপির ভাবনা তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা পুলিশের এজহার গ্রহণ করা হয়না কেন এমন প্রশ্ন তুলে ধরেন। বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলোআপের দাবি করেন। অন্যদিকে পুলিশ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে বক্তারা নাগরিকের আইন মান্য করার সংস্কৃতি উন্নতের আহ্বান জানান।

প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রেও আইনের যথাযথ প্রয়োগের দাবি করে আবেদ খান বলেন, পুলিশের নিজেদের আরো উন্মুক্ত করতে হবে। গণমাধ্যম ওয়াচ ডগের ভূমিকা পালন করে সারা বিশ্ব জুড়ে এটি বুঝতে হবে।

অনুষ্ঠানে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, গণমাধ্যমের ভূমিকা আছে বলেই এখনও সমাজ ভালো অবস্থানে আছে। আইনজীবী মঞ্জুর মোর্শেদ ক্ষমতাসীন এবং প্রভাবশালীদের দৌরাত্মের ফলে দায়িত্ব পালন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে এমন বক্তব্য পুলিশের মুখ দিয়ে আসার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার কথা বলেন।

সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশকে মানুষ পুরোপুরি বিশ্বাস করে উঠতে না পারছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়ার তথ্য আদায়ের প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা উচিত। বরং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যকে যাচাই-বাছাই করলে বেশি কাজ হবে।

আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম বলেন, প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রেও আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করলে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খান বলেন, আস্থা ফেরাতে পুলিশেরই ভূমিকা রাখতে হবে বেশি। সাংবাদিক মুন্নী সাহা বলেন, ভালো পুলিশ এবং ভালো সাংবাদিকের মেলবন্ধন ঘটতে হবে।

মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী, ডা. অরুপ রতন চৌধুরী।

মতবিনিময় অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক তথ্য কমিশনার সাদেকা হালিম, নির্বাচন পর্যবেক্ষক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, সৈয়দ আবুল মকসুদ, ফকির আলমগীর, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মোহাম্মদ আলী শিকদার প্রমুখ।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ০২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test