E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বাঁশখালীতে পরিবেশ রক্ষা করেই কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে’

২০১৬ এপ্রিল ১৭ ১১:১৫:৩৯
‘বাঁশখালীতে পরিবেশ রক্ষা করেই কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে পরিবেশ ও জনজীবনের কোন ক্ষতি হবে না বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হা্উসে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ মতামত দেন তারা। এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপর ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

ভিডিও চিত্রে দেখানো হয়, এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের পরিবেশের কোন ক্ষতি না করেই প্রকল্প করা হয়েছে। স্বাভাবিক রয়েছে জীববৈচিত্র। প্রভাব পড়েনি কৃষিতে। মানুষের জীবনেও নেতিবাচক কোন প্রভাব পড়েনি।

তথ্য উপাত্তসহ ভিডিও চিত্রটি উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎ বিভাগের মহাপরিচালক পাওয়ার সেল মোহাম্মদ হোসাইন। পরে সভায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মকবুল আহমেদ বলেন, দেশে বিভিন্ন ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে। কিন্তু কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা আছে। মানুষকে বোঝাতে হবে।

গণ্ডামারায় এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিবেশগত দিক থেকে এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করে। সেখানে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি হলে পরিবেশের কি কি ক্ষতি হতে পারে এবং তা কিভাবে রক্ষা করবে সে বিষয়গুলো বিবেচনায় আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদফতর বিষয়গুলো পরীক্ষা নীরিক্ষা করে দেখছে। তাদের অনেক প্রস্তাব আমরা গ্রহণ করিনি। মানুষের এবং পরিবেশের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেই দিক বিবেচনা করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোন বিষয় থাকলে আমরা কখনো ছাড়পত্র দেব না।

বিদ্যুৎ সংকট নিরসন জরুরি উল্লেখ করে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হয়েছে।তাই দেশের বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে সরকার এ ধরনের প্রকল্প চায়।

‘পরিবেশ রক্ষা করেই প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। পরিবেশের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এটি হলে বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে। উপকৃত হবে দেশের মানুষ।’

এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের উপদেষ্টা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির বলেন, দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হলে কয়লা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

পরিবেশের ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখে অত্যন্ত উন্নত মানের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিবেশের ক্ষতি কমাতে অত্যাধুনিক যন্ত্র আনা হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থদের পুরর্বাসন ও কর্মসংস্থানের পরিকল্পনাও রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এমনভাবে নির্মাণ হবে যাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এস আলম গ্রুপের দক্ষ ব্যবস্থাপনার অভার ছিল মন্তব্য করে চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করা প্রয়োজন ছিল।

পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পরিবেশের কোন সমস্যা হবে না এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আগে বুঝিয়ে বললে এ ধরনের সমস্যা হতো না উল্লেখ করে গণ্ডামারা এলাকার বাসিন্দা মাস্টার মফজল আহমদ বলেন, এলাকার জনগণকে বুঝিয়ে বললে এ সমস্যা হতো না।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সাহাব উদ্দিন, এলজিইডি’র নির্বাহি প্রকৌশলী মো.শাহ আলমগীর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ১৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test