E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কাজী নজরুল ইসলামের নামে সংগীত বিশ্ববিদ্যালয় করার আবেদন

২০১৬ মে ২৫ ১৮:৫১:৩৪
কাজী নজরুল ইসলামের নামে সংগীত বিশ্ববিদ্যালয় করার আবেদন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী তাঁর দাদুর নামে সংগীত বিশ্ববিদ্যালয় করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরের জিমনেসিয়ামে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী দিনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ আবেদন জানান।

জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় কবির ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়ার কারণে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত হতে পারেননি। তবে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির বাণী পড়ে শোনান সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম আকতারি মমতাজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি হিসেবে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং স্মারক বক্তা ছিলেন কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে কবির নাতনি খিলখিল কাজী বলেন, ‘জাতীয় কবি নজরুল বৈচিত্র্যময় সাড়ে চার হাজার গান সৃষ্টি করে গেছেন। নজরুলকে জানার জন্য কোনো উচ্চতর গবেষণাকেন্দ্র নেই। নজরুলসংগীত সাধনার জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা উচিত। এটা বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও হবে না। সেখানে নজরুলের গান, কবিতা, রচনা সম্পর্কে জানতে বিদেশিরা আসবেন। এর মাধ্যমে আমরা নজরুলকে পুরো বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে পারব।’
খিলখিল কাজী বলেন, ‘নজরুল হিন্দু-মুসলমানকে গালাগালি থেকে গলাগলিতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গানে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। সমগ্র বাঙালির আত্মপ্রকাশের দুর্দান্ত এক প্রেরণা ছিলেন তিনি। তাই নজরুলের আদর্শ অনুধাবন করতে হলে তাঁর রচনা সাহিত্য পড়তে হবে। শুধু শহরে নয়, গ্রামের প্রতিটি স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের কাছে নজরুলকে পৌঁছে দিতে হবে। জাতীয় কবি সম্পর্কে তাঁদের জানাতে হবে। তাঁর আদর্শ-দর্শন নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এ কাজটি করতে না পারলে সেটি হবে আমাদের অজ্ঞতা।’
বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ টেনে কবি-নাতনি আরও বলেন, ‘তাঁর (বঙ্গবন্ধু) ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমার দাদু (নজরুল) এ দেশে আসতে পেরেছিলেন। তিনি (বঙ্গবন্ধু) আমার দাদুকে জাতীয় কবি করেছিলেন। তিনি প্রায় রাত নয়টার পর আমাদের ধানমন্ডির বাসায় চলে আসতেন। দাদুর খোঁজ খবর নিতেন।’

অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবিকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন ও চর্চার চেষ্টা হয়েছে। নজরুলের গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশের জাতীয় কবি হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছিলেন। যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে দ্রোহের কবি ছিলেন নজরুল। মহান মুক্তিযুদ্ধে নজরুলের লেখা গান-কবিতা আমাদের উজ্জীবিত করেছে।’

স্মারক বক্তা আবুল মোমেন বলেন, ‘জঙ্গিবাদ, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বাংলা ভাষায় নজরুল সবচেয়ে জোরালো ও কার্যকরভাবে লিখেছেন। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে নজরুলের লেখা আমাদের প্রেরণা জোগাবে।

বাঙালির চিরায়ত উদার মানবতার যে ঐতিহ্য আছে, নজরুল সেই ধারার শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি। বর্তমানে যে জঙ্গিবাদী অপতৎপরতা চলছে, তাতে বাংলাদেশের এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হুমকির মুখে পড়েছে। এ সময়ে নজরুলচর্চা আমাদের পথ দেখাবে।’

(ওএস/এএস/মে ২৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test