E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধযোগ্য’

২০১৬ সেপ্টেম্বর ১৭ ১৬:৪৯:০১
‘এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধযোগ্য’

নিউজ ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক তিনটি ব্যাধি এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে একত্রে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার কানাডার মন্ট্রিলে অনুষ্ঠিত ফিফথ গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ) রিপ্লেনিসমেন্ট কনফারেন্সের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধযোগ্য ও এসব রোগ চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন অঙ্গীকার, সংকল্প ও সংহতি। একত্রে কাজ করার এই অঙ্গীকার এই ব্যাধির অবসান ঘটাতে পারে।’

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অবকাঠামো, স্বাস্থ্যপণ্য ও সেবায় বিনিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে আমার সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। আমাদের প্রচেষ্টায় আমরা বৈশ্বিক তহবিলের সহায়তা আশা করছি।

অনুষ্ঠানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সল, টোগোর প্রেসিডেন্ট ফুয়ারে গ্রেন্সিভ, গ্লোবাল তহবিলের নির্বাহী পরিচালক মার্ক আর দাইবাল ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লা ফ্রাঙ্কোফনির মহাসচিব মিখায়েল জেন সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এবং লা ফ্রাঙ্কোফনির বিষয়ক কানাডীয় মন্ত্রী ম্যারেই ক্লদি বিবেউ অধিবেশন পরিচালনা করেন।

উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ দিক’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সমাজের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা অত্যন্ত জরুরি।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্ব আজ উন্নয়ন প্রত্যাশার এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। দারিদ্র্যমুক্ত সবল একটি বিশ্ব সমাজ সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০১৫ সালে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।’

তিনি বলেন, সক্ষমতা ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লক্ষ্যসমূহসহ এমডিজির লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে। গত দুই দশকে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ কমেছে এবং পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুহার ৬৬ শতাংশ ও গত দেড় দশকে নবজাতকের মৃত্যুহার ৬২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০২০ সাল নাগাদ ম্যালেরিয়া নির্মূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং গত দু’দশক ধরে এইচআইভি/এইডস প্রাদুর্ভাবের নিম্ন হার বজায় রেখেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ২০০৪ সাল থেকে প্রায় ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করেছি এবং এর মধ্যে ৯৪ শতাংশ রোগীর সফলভাবে চিকিৎসা করা হয়েছে। আমরা এই সাফল্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’

আয়োজকদের মতে, এই সম্মেলন বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক তিনটি রোগ এইডস, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মার মহামারী নির্মূল করতে সারা বিশ্বের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে।

আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া নির্মূলের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে এই সম্মেলনে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ, স্বাস্থ্য ও অর্থ মন্ত্রীদের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছে।

২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মারাত্মক এই তিনটি রোগের কবল থেকে ৮ মিলিয়ন জীবন রক্ষায় ১৩শ’ কোটি মার্কিন ডলার এবং ২০২০ সালের মধ্যে ৩০-৩২ মিলিয়ন জীবন রক্ষায় ৪ হাজার ১শ’ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল সঙগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে পঞ্চম রিপ্লেনিসমেন্ট সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যার ফলে এসব দেশের ২৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অর্থনৈতিক সাশ্রয় হবে।

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) থেকে জন্ম নেয়া প্রতিষ্ঠান হচ্ছে গ্লোাবাল ফান্ড। এই ফান্ড বিশ্বজুড়ে রোগের ভারে জর্জরিত ১০০টিরও বেশি দেশে সহস্রাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ১৭ মিলিয়নেরও বেশি জীবন রক্ষায় অংশীদার।

প্রতি তিন বছরে একবার গ্লোবাল ফান্ডের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ওয়াশিংটনে পূর্ববর্তী সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test