E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘মাফিয়া বলুক আর ডাকাতই বলুক, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন হচ্ছে’

২০১৬ নভেম্বর ১৬ ১৪:২৯:৫৮
‘মাফিয়া বলুক আর ডাকাতই বলুক, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন হচ্ছে’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বন্দর মাফিয়া ডাকাতদের হাতে জিম্মি বলা হলেও এর উন্নয়ন হচ্ছে দাবি করে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, মাফিয়া বলুক আর ডাকাতই বলুক, যতই তাদের হাতে জিম্মি বলা হোক, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন হচ্ছে।

বুধবার ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট (এনএমআই) মাঠে নবনির্মিত ট্রেনিজ হোস্টেল ভবনের উদ্বোধন ও ১৬তম ব্যাচের পাসিং আউট অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, একসময় ছিল যখন বন্দরের কোন উন্নয়ন হয়নি, নদীপথের কোন উন্নয়ন হয়নি। মংলা বন্দর লোকসানে ছিল। এ অবস্থা থেকে ফিরিয়ে বন্দরের উন্নয়ন করা হয়েছে। যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে। বিশ্বের ১০০টি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর আগে ৯৬তম স্থানে ছিল। বিগত ৮ বছরে সে অবস্থান থেকে ২২ ধাপ এগিয়ে এসেছে। তা থেকে বোঝা যাচ্ছে চট্টগাম বন্দরের উন্নয়ন হচ্ছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে।

‘চট্টগ্রাম বন্দর ডাকাতদের হাতে পড়েছে, মাফিয়াদের হাতে পড়েছে, এরকম যে যাই বলুক না কেন, বন্দর ৮ বছরে ২২ ধাপ এগিয়েছে। কেউ এ ধরনের অভিযোগ করে বন্দরের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। ’

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর পাঁচ ডাকাতের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে এ ধরনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন নৌমন্ত্রী।

বর্তমানে নৌ দুর্ঘটনা কম ঘটছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, আগে নৌ দুর্ঘটনা বেশি ঘটতো। বর্তমানে তা কমে এসেছে। নদী রক্ষা কমিশন গঠন করে নদী রক্ষা করা হচ্ছে। ফলে নৌ দুর্ঘটনা কমে এসেছে। ২০১৬ সালকে নৌডুবি মুক্ত বছর করা হয়েছে। চলতি বছরের সাড়ে ১০ মাসে কোন নৌডুবির ঘটনা ঘটেনি। বছরের বাকি সময়টাতে তা অব্যাহত থাকলে ২০১৬ সালকে নৌডুবি মুক্ত বছর ঘোষণা করতে পারবো।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল থেকে নৌ সংস্থাগুলোতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আগে দেশের প্রায় ৭ হাজার নদীর মধ্যে ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল। পরবর্তী সময়ে তা কমে ৪ হাজার কিলোমিটারের নিচে নেমে আসছিল। বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসির মতো দুটো সংস্থার মাধ্যমে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি নৌপথ উদ্ধার করা গেছে। আগে নদী খননের জন্য আমাদের তেমন কোন ড্রেজার ছিল না। বর্তমানে আমাদের ২১টি ড্রেজার আছে। আরও ২০টি কেনা হবে। বুধবার বিকেলেই ১০টির নির্মাণকাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

এনএমআইর নাবিকদের উদ্দেশে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ব্লু ইকোনমি আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তাই এ খাতে অর্থ উপার্জনের জন্য নাবিকদের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সাহসের সঙ্গে কাজ করতে হবে। সাহস ও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগোলেই সফল হওয়া সম্ভব।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ভাল উদ্দেশ্য নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নৌ সেক্টরে দৃশ্যমান উন্নয়ন হচ্ছে। তাই কে কি বললো তা বড় কথা নয়, আমরা কি করছি তা-ই বড়।

বেকার নাবিকদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে ৩৬টি জাহাজ সংগ্রহ করা হবে। এটি করা গেলে এখানে নাবিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তবে মেরিন সেক্টরে কিছু সমস্যা রয়েছে বলেও স্বীকার করেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম খালেদ ইকবাল। স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ফয়সাল আজিম।

প্রশিক্ষণার্থীদের সুষ্ঠু আবাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় ৩০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর আবাসন সুবিধার জন্য ৬ তলা বিশিষ্ট এ হোস্টেল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। নবনির্মিত ট্রেনিজ হোস্টেল ভবনের নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ব্লক’।

এনএমআই সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৬টি ব্যাচে এ ইন্সটিটিউট থেকে ২ হাজার ৬৭১ জনকে প্রি-সী রেটিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে ২ হাজার ৫৬ জন নবীন নাবিক দেশি-বিদেশি জাহাজে চাকরি পেয়েছে। এছাড়া ১৯৯৫ থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সহায়ক (আনুষংগিক) কোর্সে ১৬ হাজার ২২৮ জন রেটিং ও জাহাজী কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থার এসটিসিডব্লিউ কনভেনশন অনুসরণে কোর্স করানো হয়েছে। বুধবার ৪১ জন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ শেষ করে তাদের কর্মজীবনে পদার্পণ করছেন।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ১৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test