E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শুধু ভারত নয় চীনের সঙ্গেও সমান সম্পর্ক গড়ার আহ্বান

২০১৪ জুন ২৮ ১৬:২২:০৪
শুধু ভারত নয় চীনের সঙ্গেও সমান সম্পর্ক গড়ার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার : আগামী শতাব্দীতে চীন পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে তাই বাংলাদেশকে চীন ও ভারত দুই দেশের সঙ্গেই সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যেতে হবে।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক এন্ড পিস স্টাডিজ(সিএসপিএস) আয়োজিত ‘ভূ-মণ্ডলীয় রাজনীতি: দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন, সীমান্ত ব্যবস্থা এতটাই দুর্বল যে মিয়ানমারের মত দেশও গুলি করে আমাদের দেশের মানুষকে হত্যা করছে। ক্ষমতার লোভে সরকার এতটাই দিশেহারা যে এ ব্যাপারে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ব্যাপারটি এমন দাঁড়িয়েছে যে ‘চড়-থাপ্পড় মেরেছে অপমান তো করেনি।’

এ সব থেকে মুক্তি পেতে সরকারের বিরুদ্ধে গণবিপ্লব এবং জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান বক্তারা।

গোল টেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্ষমতাধররা যখন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তখন বুঝতে হবে তারা অন্যায় করছেন। এবং তাদের পতন খুব শীঘ্রই হবে।

তিনি বলেন, মোদীর ভারতকে আমেরিকা বিশ্বাস করে না। তিনি জনপ্রিয় হয়ে বিজয়ী হলেও অজনপ্রিয় হতে বেশি সময় লাগবে না। তাই ধর্মীয় ইস্যুকে গুরুত্ব না দিয়ে আমাদের জাতীয় এবং রাষ্ট্রীয় বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, গত শতাব্দীতে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে আটলান্টিক মহাসাগর নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ হলেও বর্তমানে ভারত মহাসাগর নিয়ে চলছে স্নায়ুযুদ্ধ।

তিনি বলেন, সরকার কি করছে সে দিকে না তাকিয়ে ভবিষ্যতে কি হবে সেটা নিয়ে আমাদের আলোচনা করা দরকার। ৪ বছর আগেও ভারতের আশেপাশে ছোট দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক বিশ্ব ‘ভারতের চোখ দিয়ে দেখতে হবে’ এমন একটা পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু ইদানীং এ ধারার পরিবর্তন হচ্ছে।

ভারত ও চীন বাংলাদেশকে কাছে পেতে চাইছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা দেশের পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করবেন তারা একটি নয় দুই দেশের সঙ্গে সমন্বয় করেই পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করবেন।

তিনি আরো বলেন, রাশিয়া কোন দিকে তাদের মনোযোগ দিচ্ছে আমরা সে দিকে না তাকিয়ে বরং ভারত, চীন, আমেরিকার আগ্রহ কোন দিকে সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যায় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। এর কারণ আন্তর্জাতিক রুট হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ খুবই লোভনীয়।

তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা বিচার ব্যবস্থাসহ সকল সেক্টর নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। সেখানে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার কথা বলা কেমন যেন বেমানান।

তিনি আরো বলেন, সুষমা স্বরাজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েও বাংলাদেশের মত গুরুত্বপূর্ণ দেশ সফরে এলেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী গেলেন ভুটানে। এতে কি বুঝা যায়?

সাবেক জজ ইকতেদার আহমেদ বলেন, অতীত ইতিহাস না জানলে ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। ২৩ বছরে পাকিস্তান যতটুকু শোষণ বাংলাদেশকে করেছে তার চেয়ে বেশি শোষণ করেছে ভারত। ভারতের ৫ লক্ষ লোক এদেশে কাজ করছে। বাংলাদেশের কত লোক ভারতে কাজ করে।

তিনি আরো বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে সুজাতা সিং এরশাদকে ধমকে গেলেন নির্বাচনে না আসলে এদেশে ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান হবে। কিন্তু সেই সুজাতা সিংই কট্টর ধর্মীয় মৌলবাদী দল বিজেপির তল্পিবাহক হয়ে এদেশে আসলেন।

ভারত বাংলাদেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত থেকে গরু কিংবা অন্যান্য সামগ্রী আনতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু ফেন্সিডিল কিংবা মাদকদ্রব্য আনতে গিয়ে ক’জন মারা যাচ্ছে।

সাবেক সচিব শাহ্ আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাদেক খান।

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট ফেরদৌস আক্তার ওয়াহিদা, গ্রীনওয়াচ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, দৈনিক নয়াদিগন্তের সহকারী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলি, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম আনোয়ার হাশিম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, চলচ্চিত্র অভিনেতা শেখ আবুল কাশেম মিঠুন প্রমুখ।


(ওএস/এটিআর/জুন ২৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test