E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ছুটির দিনে কোথাও চিকিৎসক পাওয়া যায় না

২০১৪ জুন ২৯ ১৫:৩৪:১৮
ছুটির দিনে কোথাও চিকিৎসক পাওয়া যায় না

স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমস্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘দুনিয়ার কোথাও ছুটির দিনে চিকিৎসক পাওয়া যায় না।

কেউ মরে গেলেও চিকিৎসক আসেন না। কিন্তু বাংলাদেশের হাসপাতালে ছুটির দিনেও জরুরি চিকিৎসা সেবা চালু থাকে।’

রবিবার জাতীয় সংসদে ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় সাংসদেরা স্বাস্থ্য খাতের নানা অনিয়ম তুলে ধরলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংসদদের সমালোচনাকে সাধুবাদ জানান। তবে তিনি এও বলেন, সাংসদেরা না দেখেই সমালোচনা করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো যেন ঠিকভাবে চলে, সে জন্য তাঁদের উদ্যোগী হতেও আহ্বান জানান তিনি।

কয়েকজন সাংসদ স্বাস্থ্য খাতে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাজেটে বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সেবা পেতে বরাদ্দ দ্বিগুণ করা উচিত।

সাংসদ মো. নোমান বলেন, ‘স্বাস্থ্যব্যবস্থা নাজুক পর্যায়ে আছে। সেখানে মানুষের বোবা কান্না শোনা যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দেশের সবচেয়ে বড় বস্তি। ডাক্তার-নার্সদের অনেকেই স্বাস্থ্য-বাণিজ্যে ব্যস্ত। হাজিরা খাতায় সই করে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে অনেকে দায়িত্ব পালন করেন। হাসপাতালে কবরের গন্ধ পাওয়া যায়। যন্ত্রপাতি দিলেও বেচে দেয় বা নষ্ট করে ফেলে। মানুষ ওষুধ পায় না। তাই এসব খাতে বরাদ্দ না বাড়িয়ে ছাঁটাই করা উচিত।’

সাংসদ মো. শওকত চৌধুরী বলেন, ‘আমার পরিবারে ১১ জন চিকিৎসক আছেন। ডাক্তার কী জিনিস, আমি জানি। সৈয়দপুরের ডাক্তার রংপুরে গিয়ে থাকেন। তাহলে চিকিৎসা হবে কীভাবে? আপনারা গরিব মানুষের জন্য কিছু করেন। হাসপাতালের ওষুধ চুরি বন্ধ হলে ৬০ শতাংশ রোগী বিনা মূল্যে ওষুধ পেত। কিন্তু এখন ১০ শতাংশ রোগীও ওষুধ পায় না।’

সাংসদ নুরুল ইসলাম মিলন মেডিকেল কলেজে শিক্ষার মান বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে বলেন, ‘মেডিকেল কলেজে শিক্ষার মান খুবই করুণ। বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আরও খারাপ। প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন, তার পরও ডাক্তাররা গ্রামে যাচ্ছেন না। চিকিৎসা শিক্ষার আমূল পরিবর্তন ঘটাতে হবে। যেসব ছাত্রছাত্রী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে, তাদের ওরিয়েন্টশনের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে গ্রামে পাঠাতে হবে; যাতে তারা গ্রামের মানুষকে ভালোবাসে।’

রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা কম। ঢাকায় আসতে মানুষের নানা ধরনের ভোগান্তি হয়। ছোট একটি যন্ত্র অচল হলে, অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট থাকলে মাসের পর মাস অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকে, অ্যাম্বুলেন্স চলে না। জেলা পর্যায়ে যেন এগুলো মেরামতের ব্যবস্থা হয়।

হাজি সেলিম গরিব গ্রামবাসীর পাশে চিকিৎসকদের দাঁড়াতে হবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ দেশের গরিবেরা চিকিৎসা পায় না। বড়লোকেরা সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক যান। তার পরও বিনা পয়সায় গরিবদের ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাতে হবে।

উত্তরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আপনাদের এ উদ্বেগ আমাদের সহায়তা করবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরকার ও বিরোধী দলের সবার। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা দেখার দায়িত্ব সাংসদের। এ দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী বা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নয়। আপনারা এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র দেখভাল করেন, নিয়মিত সভা করেন এবং কী করণীয়, সে বিষয়ে সুপারিশ করেন। এসব সুপারিশ শতভাগ বাস্তবায়নের সুপারিশ করছি।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামতে স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসনই সিদ্ধান্ত নেবে। এ জন্য ঢাকায় আসতে হবে না। তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী ও পঙ্গু হাসপাতালে যান সামনে পরিষ্কার হয়ে গেছে। আপনারা না গিয়ে সমালোচনা করছেন।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ সাংসদসহ বিত্তবানদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে আর্থিকভাবে সাহায্য করার আহ্বান জানান। তিনি জানান, ঝিনাইদহের একজন সাংসদ তাঁর বেতনের পুরোটাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দান করেন। এটা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে।

(ওএস/এটিআর/জুন ২৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test