E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রেলওয়ের উন্নয়নে ১০ প্রকল্প অনুমোদন

২০১৫ নভেম্বর ১১ ১২:৪২:০৫
রেলওয়ের উন্নয়নে ১০ প্রকল্প অনুমোদন


স্টাফ রিপোটার: বাংলাদেশ রেল সেবার মান আধুনিকায়ন, নিরাপদ ও আরামদায়ক করার জন্য নতুন যাত্রীবাহী কোচ ও ইঞ্জিন ক্রয়সহ মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৭টি নতুন এবং ৩টি সংশোধিত। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬ হাজার ২৫০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।



এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ৬৭২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৩ হাজার ৫৭৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। গতকাল রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

বৈঠক শেষে আহম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের ২৫০টি নতুন যাত্রীবাহী কোচ ও ১০টি ইঞ্জিন ক্রয় করবে সরকার। রেলওয়ে আশা করছে এর ফলে রেলসেবার মান আধুনিকায়ন, নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে। অনুমোদিত প্রকল্প দুটোর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। এ ব্যয়ের মধ্যে

সরকার ৫৭৪ কোটি টাকা দেবে, বাকি ১৫৩৪ কোটি টাকা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকল্প সাহায্য হিসেবে দেবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্প দুটো ২০১৯ সালের জুন নাগাদ বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্প বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ১৩৭৪ কোটি টাকার বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ এবং ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ নামক প্রকল্পের আওতায় ২০০টি মিটার গেজ এবং ৫০টি ব্রড গেজ কোচ কেনা হবে। এছাড়াও, কোচগুলো ধুয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ২টি ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট এ প্রকল্পের আওতায় কেনা হবে। এছাড়া ৭৩৪ কোটি টাকার বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য লোকোমোটিভ রিলিফ ক্রেন এবং লোকোমোটিভ সিমুলেটর সংগ্রহ নামক অপর একটি প্রকল্পের আওতায় ১০টি ইঞ্জিন, ৪টি অ্যাকসিডেন্ট রিলিফ ক্রেন এবং একটি লোকোমোটিভ সিমুলেটর কেনা হবে।

তিনি বলেন, রেলে মিটার গেজে চলার উপযোগী ১ হাজার ১৬৫টি যাত্রীবাহী কোচ বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের রয়েছে। এর মধ্যে ৫৯১টির অবস্থা ভালো নয়। ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপদ ও আরামদায়ক যাত্রী সেবা দিতে পারছে না। অন্যদিকে ব্রডগেজে চলার উপযোগী ৩২৪টি কোচ রয়েছে। এর মধ্যে ৭৮টির অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে। ফলে এ প্রকল্প দুটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নতুন রেলওয়ে কোচ কেনা হলে তা ইন্টারসিটি ট্রেন হিসেবে চলবে। একই সঙ্গে পুরনো কোচগুলো নতুন কোচ দিয়ে স্থান্তারিত হবে। আশা করছি এতে যাত্রীরা নিরাপদ, উন্নত ও আরামদায়ক রেল ভ্রমণ করতে পারবেন।

বৈঠকে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) সহজ শর্তের ঋণে ছোট ও মাঝারি ধরনের ৬০টি (৩ হাজার ৮৮০ মিটার) সেতু এবং নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য একটি ৮৩৫ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এ সংক্রান্ত ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। তবে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৯১১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। জাইকার অর্থায়নের বাইরে ১ হাজার ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। দেশের পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২৪টি জেলায় ৬১টি ছোট ও মাঝারি সেতু নির্মাণে একনেক সভায় ২৯১২ কোটি টাকার 'ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট' নামক অপর একটি প্রকল্পেরও অনুমোদন দেয়া হয়। এ ৬১টি সেতুর দৈর্ঘ্য একত্রে ৪৭১৫ মিটার। যে ২৪টি জেলায় এ সেতুগুলো নির্মিত হবে তা হলো_ যেসব জেলার ব্রিজ ও সেতু নির্মাণ এবং পুনর্নির্মাণ করা হবে সেগুলো হলো- ফরিদপুর (৬টি), মাদারীপুর (১টি), সিরাজগঞ্জ (৮টি), নাটোর (১টি), পাবনা (৪টি), নওগাঁ (১টি), রাজশাহী (২টি), বগুড়া (২টি), রংপুর (৪টি), জয়পুরহাট (২টি), লালমনিরহাট (১টি), গাইবান্ধা (২টি), দিনাজপুর (৫টি), নীলফামারী (১টি), পঞ্চগড় (২টি), বাগেরহাট (২টি), যশোর (১টি), ঝিনাইদহ (২টি), কুষ্টিয়া (৩টি), বরিশাল (৭টি), পিরোজপুর (১টি), ঝালকাঠি (১টি), নরসিংদী (১টি) এবং নড়াইল (১টি)। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ৩৩ দশমিক ২১ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ৪ হাজার ৭১৫ মিটারের ৬১টি ব্রিজ নির্মাণ ও প্রতিস্থাপন, ৭ দশমিক ৫০ লাখ ঘনমিটার বাঁধের মাটির কাজ, ৪২ কিলোমিটার পেভমেন্ট নির্মাণ এবং পরামর্শক নিয়োগ, আউট সোর্সিং, এনজিও সেবা, যানবাহন ক্রয় ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম করা হবে।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো- আধুনিক সুবিধাসহ ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন ও পেটেন্ট ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক অধিদফতরের অফিস ভবন নির্মাণ, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার আওরঙ্গাবাদ থেকে ব্রাহাবাজার ঘাট পর্যন্ত পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণমূলক কাজ, ব্যয় হবে ২১৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সোনাপুর- সোনাগাজী-জোবারগঞ্জ সড়ক উন্নয়ন, ব্যয় হবে ১৭২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৪৪৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ (সংশোধিত), ব্যয় ২১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উন্নয়ন, ব্যয় হবে ২৫৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রথম পর্যায়, এর ব্যয় ১১০ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২০৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test