E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চট্টগ্রামের ফয়’স লেক হ্রদ ও পাহাড়ের কোলে

২০১৬ জানুয়ারি ২৫ ১৮:৫৮:৪২
চট্টগ্রামের ফয়’স লেক হ্রদ ও পাহাড়ের কোলে

মোস্তাক চৌধুরী : ঝরনার জলে স্নান, ঢেউয়ের তালে নাচানাচি আবার রাইড নিয়ে মাতামাতি—সবই এক জায়গায়। হ্রদ ও পাহাড়ের কোলে গড়ে উঠেছে এমন বিনোদন কেন্দ্র। চট্টগ্রামের ফয়’স লেকের এ বিনোদন কেন্দ্র হাতছানি দেয় ভ্রমণ পিয়াসীদের।

নৈসর্গিক সৌন্দর্যমণ্ডিত প্রকৃতির কাছে ছুটে যায় কর্মব্যস্ত মানুষ। এ বিনোদন পার্কে দিনে বেড়ানোর পাশাপাশি সুযোগ রয়েছে রাতযাপনেরও। অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও সি ওয়ার্ল্ড নিয়ে পুরো ফয়স লেক বিনোদন কেন্দ্র। মোট ৩৩৬ একর পাহাড়ি জমির ওপর এই পার্ক। দুটি পার্কই হরেক রকম রাইডে ঠাসা। কনকর্ডের ব্যবস্থাপনায় ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৫ সালে। এখানে রয়েছে ২০টিরও বেশি বিভিন্ন ধরনের রাইড।
নৌকায় নৌকায় ঠোকাঠুকি, পানিতে দোল খাওয়া আর আরেক নৌকার সঙ্গে ইচ্ছামত ধাক্কাধাক্কি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে শিশু-কিশোররা। বাম্পার বোট নামে এ রাইডটি বেশ জনপ্রিয়। বাম্পার কার দিয়ে ঠোকাঠুকির প্রতিযোগিতা করা যায়।

পাশ দিয়ে সার্কাস ট্রেন ঝিকঝিক শব্দে চলে যায়। রঙবেরঙের ঘোড়ার ওপর বসে শিশু-কিশোর কী মজাতেই না ব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ! এ রাইডের নাম বেবি কেরাওসাল। তাদের জন্য রয়েছে ভিডিও গেমসও। আর লাফালাফি-দাপাদাপির জন্য বাগ বাউন্স ও হ্যাপি জাম্প বাচ্চাদের খুবই প্রিয়।

ছোট-বড় কারও যদি আকাশ ছোঁয়ার ইচ্ছা হয়, তাহলে উঠতে হবে ফেরিস হুইলে। এছাড়া রেড ড্রাই স্লাইড, পাইরেট শিপ, ইয়েলো ড্রাই স্লাইড ইত্যাদি রাইডে চড়া যাবে।
প্যাডেল বোট নামে একটি বৈঠাবিহীন নৌকা নিয়ে (দু’জন) আঁকাবাঁকা হ্রদের ঝোপ-জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া যায় অনায়াসে। পানির ওপর সাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতাটা হলো। হ্রদে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘোরার জন্য রয়েছে ফ্যামিলি রোলার কোস্টার।

হ্রদের জলে নৌকাযোগে ভাসতে ভাসতে পাশের পাহাড় আর বনজঙ্গলে দু-একটি হরিণ কিংবা বানরও দেখা যেতে পারে। আর পার্কের খাবার ছিটালে পার্কের কবুতরগুলো তো বসতে পারে আপনার গায়ে।

পার্কের রাইডগুলোর জন্য প্রতিজনকে খরচ করতে হবে ৩০ থেকে ৬০ টাকা। তবে ১০-১৫ জনের বড় ইঞ্জিন নৌকাগুলোর খরচ ২৫ মিনিটে ৭০০ টাকা। রাইড ছাড়া পার্কের প্রবেশমূল্য বড়দের জন্য ১৫০ টাকা। তিন ফুটের কম শিশুদের প্রবেশমূল্য না থাকলেও এর বেশি উচ্চতার শিশুদের জন্য ৭৫ টাকা।

এছাড়া পিকনিকের জন্যও নানা অফার। শিক্ষার্থীদের পিকনিকের ক্ষেত্রে প্রতিজনের প্রবেশমূল্য ১০০ টাকা ও করপোরেটের জন্য প্রতিজনের প্রবেশ ফি ১২০ টাকা। উভয় ক্ষেত্রে ১০০ টাকা দিয়ে পার্কের সব রাইড ব্যবহার করার সুযোগ পাবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পার্ক খোলা থাকে।

ফয়স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের পাশে ২০০৭ সালে গড়ে ওঠে সি ওয়ার্ল্ড নামে ওয়াটার পার্ক। ক্রমেই এই ওয়াটার পার্কটি ভ্রমণপিয়াসীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এখানে ওয়েব পুল, স্লাইড ওয়ার্ল্ড, টিউব স্লাইড, ফ্যামিলি পুল, ড্যান্সিং জোনসহ নয়টি রাইড রয়েছে।
কৃত্রিম ঢেউয়ের তালে তালে এখানে নেচে বেড়ায় তরুণ-তরুণীরা। ঝরনার পানিতে দাপাদাপি কে না করতে চায়? গরমের মৌসুমে ওয়াটার পার্কে লোকজনের ভিড় বেড়ে যায় বলে জানালেন কনকর্ডের সহকারী ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিত্ ঘোষ। তিনি বলেন, একসঙ্গে দুই হাজারের বেশি লোক ওয়াটার পার্কে নামতে পারে।

ফয়স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ফটক দিয়ে ওয়াটার পার্কে যেতে চাইলে প্রতিজনের খরচ পড়ে ৩৯০ টাকা। এক্ষেত্রে ১০ মিনিটের ইঞ্জিন নৌকা ভ্রমণের সুযোগও থাকে। আবার কর্নেল হাট বিশ্ব কলোনি ফটক দিয়ে ওয়াটার পার্কে প্রবেশ ফি ২৭০ টাকা।

অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও ওয়াটার পার্কে বেড়াতে এসে দুপুরের খাবার সারতে চাইলে লাগবে ন্যূনতম ২০০ টাকা। এখানে রয়েছে লেকভিউ ও রিসোর্ট নামে দুটি রেস্তোরাঁ। এছাড়া পার্কে জুস কর্নার, ফাস্টফুড, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদির দোকান তো রয়েছেই।
রাত যাপনের ব্যবস্থা

ফয়স লেকে রাতযাপনের সুবিধাও রয়েছে। হ্রদের পাড়ে রয়েছে আধুনিক সুযোগসংবলিত রিসোর্ট। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ রিসোর্টের ঘর থেকে অনায়াসে দেখা মেলে পাহাড়, হ্রদ ও আকাশ। কাচঘেরা জানালার পর্দা সরিয়ে দিলেই রাতে চাঁদ দেখা যায়।

এছাড়া রয়েছে রেস্টহাউস। রেস্টহাউস ও রিসোর্টের অতিথিরা অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও ওয়াটার পার্কের সব রাইড বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। এসব কক্ষের সর্বনিম্ন ভাড়া প্রতি রাত (দু’জন) তিন হাজার ৭০৯ টাকা।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ২৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test