E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সিনতিয়ার দুটো কিডনি নষ্ট হওয়ার পথে, অনিশ্চিত ভবিষ্যত! 

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ২৮ ১৬:০৮:২৮
সিনতিয়ার দুটো কিডনি নষ্ট হওয়ার পথে, অনিশ্চিত ভবিষ্যত! 

মো: আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : দুটো কিডনি ছোট হয়ে যাওয়া মৌলভীবাজারের ছোট্র শিশু সিনতিয়া আক্তার ট্রুটির (৮) জীবনে ঘোর অমানিশা, সে বাঁচতে চায়, কিন্তু তার দুটো কিডনিই নষ্ট হওয়ার পথে। পাড়ার অন্য শিশুর মত সেও প্রতিদিনের মত সপ্ন দেখে সুস্থ দেহে বেঁচে থেকে মানুষের মত মানুষ হবার।

সিনতিয়ার সমবয়সী অন্য শিশুরা যেখানে বড় হবার সপ্নে বিভোর থাকে সেখানে সিনতিয়া তার দুটো কিডনি নিয়ে কোনরকম বেঁচে থাকার লড়াই করে যাচ্ছে প্রতি মুহুর্তে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার যথাযত বয়স হলেও শারীরিক অক্ষমতার কারনে স্কুলে যাওয়া তার পক্ষে কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সিনতিয়ার পরিবার।

মৌলভীবাজার শহরের পৌর এলাকার বেড়িরচরের একটি কলোনির ভাড়াটিয়া বাসিন্দা সিরাজ উদ্দিন এর ছোট্র মেয়ে সিনতিয়া আক্তার ট্রুটির জন্ম ২০১০ সালের ১৯ ডিসেম্বর। জন্মের ২ বছর পর ২০১২ সালে তার শরীরের দুটি কিডনীর মধ্যে সমস্যা ধরা পরে। এর আগে ২০০১ সালের দিকে একই রোগে আক্রান্ত হয়ে সিনতিয়ার ভাই পাপ্পু হোসেন ১৪ বয়সে মারা যায়। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের শিশু বিষেশজ্ঞ চিকিৎসক ডা: মতিউর রহমানের স্বরণাপন্ন হলে সিনতিয়ার শরীরের দুটি কিডনীতে রোগ ধরা পরে। চলতে থাকে চিকিৎসা, কিন্ত অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় অসহায় দিনমজুর সিরাজ উদ্দিনের পক্ষে ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালানো সম্ভব হচ্ছেনা ।

অভাবের সংসারে এমনিতেই দু’বেলা খাবার জোটানো দায়, সেখানে তাদের পরিবারের একমাত্র ছোট্র শিশুটির ব্যয়বহুল চিকিৎসা অনেকটা মরার উপর খারার ঘায়ের মত। তাই সিনতিয়ার মা অসহায় নুরজাহান বেগম তার ছোট্র শিশুর জীবন বাঁচাতে সাহায্যের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন বৃত্তশালীদের কাছে। কোথাও কোন সাড়া না পেয়ে অবশেষে পত্রিকায় তার শিশুর পক্ষে লিখতে ছুটে আসেন এই প্রতিবেদকের কাছে।

নুরজাহান বেগম জানান সিনতিয়ার দুটো কিডনী একদম ছোট হয়ে আসছে, দাঁড়াতে পারেনা কোথাও, দাঁড়ালে শরীরে কাপুনি উঠে যায় , বর্তমানে সিনতিয়ার চিকিৎসা চলছে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে । বর্তমানে সেখানে প্রফেসর ডাঃ হাবিবুর রহমানের তত্বাধানে তার চিকিৎসা চলছে। নুরজাহান বেগম বলেন তার মেয়েকে প্রতি সাপ্তাহে একবার ৎরপড়ৎসড়হ নামের অতি ব্যায় বহুল ইনজেকশ শরীরে পোশ করতে হয়। তিনি চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বলেন তার বয়স ১৮ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি সাপ্তাহেই এই ইন্জেকশনটি শরীরে পোশ করতে হবে।

জানা যায় সিনতিয়ার বয়স বর্তমানে ৮ বছর পূর্ণ হলেও শারীরিক সক্ষমতায় তার ওজন বর্তমানে ১২কেজি । ২ বছর বয়সে শরীরের ওজন ১০ কেজি হলেও গত ৬ বছরে তার শরীরের ওজন বেড়েছে মাত্র ২ কেজি।

নুরজাহান বেগম কান্না জরিত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন মেয়ের মুখের কথা শুনলে মা হিসেবে নিজেকে সামলাতে পারিনা, তার বয়সী শিশুরা খেলাদুলা করছে ,স্কুলে যাচ্ছে আর আমি তাকে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। বর্তমান চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে না উঠলে তার ভবিষ্যত অন্ধকার বলে জানান নুরজাহান বেগম। চিকিৎসা ব্যায় মিটাতে পারলে তাকে সুস্থ করা সম্ভব। এসময় তিনি আরো বলেন চিকিৎসকের পরামর্শমত যে সমস্ত খাবারের কথা রয়েছে অভাবের সংসার থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্বেও তার মুখে খাবার তুলে দিতে পারিনা।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ পলাশ রায় বলেন, শিশুটির কিডনি দুটো কাজ করছেনা ,দুটো কিডনিই ছোট হয়ে আসছে। তিনি বলেন, বর্তমানে তার ডায়ালাইসেস নেয়াটা প্রয়োজন কিন্তু তার বয়স এবং ওজন যেহেতেু কম তাই এই মুহুর্তে ডায়ালাইসেস নেয়া সম্ভব না।

এদিকে শিশু সিনতিয়ার দুটো কিডনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় তার পাশের প্রতিবেশিরাও চিন্তিত তাকে নিয়ে , অনিশ্চিত ভবিষ্যত আর তার সুষ্টু চিকিৎসা করাতে না পারার কারনে প্রতিনিয়ত গভীর চিন্তায় আচ্ছন্ন সিনতিয়ার মা নুরজাহান বেগম ও বাবা সিরাজুল ইসলাম। আর শিশুটির প্রতিবেশীরা ছোট্র শিশুটির পাশে দাঁড়ানোর সাধ্য না থাকলেও পরামর্শ আর সহমর্মিতা দিয়ে যাচ্ছেন তার পরিবারকে।

সিনতিয়ার সু-চিকিৎসার জন্য সাহায্যে পাঠানোর ঠিকানা প্রযতেœ লাভলী বেগম হিাসব নং ০১২২১৭২০০০১৮৯২৭ ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লি: মৌলভীবাজার ব্রাঞ্চ।
বিকাশ নাম্বার : ০১৭৪৩০০৯০০০ (পার্সনাল)

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test