E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ের চিকিৎসার জন্য দুখিনী মায়ের আকুতি

২০২৩ জানুয়ারি ১৫ ১৪:৪৭:১৬
মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ের চিকিৎসার জন্য দুখিনী মায়ের আকুতি

আসাদ সবুজ, বরগুনা : ১০ বছর যাবৎ মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মা। বাবা বেঁচে থাকতে কিছুদিন চিকিৎসা করানো হলেও মারা যাওয়ার পরে টাকার অভাবে কোন চিকিৎসা করাতে পারছেন না মানসিক প্রতিবন্ধী শাহিনুর বেগমের। সমাজের ধনাঢ্যদের কাছে প্রতিবন্ধী মেয়ের চিকিৎসা করানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন শাহিনুর বেগমের মা মিনারা বেগম।

প্রায় ১৫ বছর আগে সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের কামড়াবাদ খালগোড়া গ্রামে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয় ৫নং আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের পূর্ব কেওড়াবুনিয়া গ্রামের সদা হাস্যজ্জল, দুরন্ত কিশোরী শাহিনুরের। স্বামীর সংসারে প্রথমে ভালোই দিন কাটছিলো শাহিনুরের, দাম্পত্য জীবনে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান। তবে স্বামীর সংসারের সুখ বেশীদিন কপালে জুটেনি কপাল পোড়া শাহিনুরের। পারিবারিক কলহের জেরে ১০ বছর আগে পারিবারিক ভাবেই স্বামীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হয় শাহিনুরের। এসময় শাহিনুরের কোলে থাকা ০৩ মাস বয়সের বাচ্চাকে স্বামীর পরিবারের লোকজন নিয়ে যায়। স্বামীর সাথে বিছিন্ন হওয়া ও ছোট বাচ্চা নিয়ে যাওয়ার শোকে ধীরে ধীরে মানসিক রোগীতে পরিনত হন শাহিনুর। বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় কিছুদিন শাহিনুরকে চিকিৎসা করানো হলেও বাবা মারা যাওয়ার পরে টাকার অভাবে আর কোন চিকিৎসাই করানো হয়নি শাহিনুরকে। বর্তমানে মায়ের কাছেই খেয়ে না খেয়ে থাকছেন মানসিক প্রতিবন্ধী শাহিনুর।

শাহিনুরের মা মিনারা বেগম বলেন, স্বামী সন্তানের শোকে শাহিনুর এখন মানসিক প্রতিবন্ধী। শাহিনুরের বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় শাহিনুর কে কিছু চিকিৎসা করানো হয়েছিল। বর্তমানে টাকার অভাবে শাহিনুরকে চিকিৎসা করাতে পারতেছি না। সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা যদি আমার মেয়ের চিকিৎসা জন্য সামান্য কিছু সাহায্য করতেন, তাহলে হয়তো আমার মেয়েটি ভালো হতো। এখন আমি আছি অন্যের বাড়িতে কাজ করে মা মেয়ে কোনমতে খেয়ে বেঁচে আছি। আমি মারা গেলে আমার এই অবলা মেয়েটির কি অবস্থা হবে, সারাক্ষণ সেই চিন্তাই করি।

তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে বরগুনার এক ছেলেকে বরিশালের একজন ডাক্তার সুদীপ হালদার চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য করেছেন। আমার মেয়ের প্রতিও যদি কোন একজন একটু সুদৃষ্টি দিতেন তাহলে আমার মেয়েটিও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারতো।

পার্শ্ববর্তী বাড়ীর ইউনুস মিয়া বলেন, মেয়েটা (শাহিনুর) প্রায় ১০ বছর যাবৎ মানসিক প্রতিবন্ধী অবস্থায় ঘরে পরে আছে। আমরা এলাকার লোকজনে অল্প অল্প করে যা সাহায্য সহযোগিতা করি সেগুলো দিয়ে ওরা মা মেয়ে কোনমতে খেয়ে পরে বেঁচে আছে। ভালো চিকিৎসা পেলে মেয়েটি হয়তো সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। শাহিনুরের মা মারা গেলে মেয়েটি কে দেখবে?

একই এলাকার হাসান বলেন, শিশু ও কিশোর বয়সে শাহিনুর বেশ চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে ছিলো। ওর মত একজন ভালো মেয়ে এ গ্রামে খুব কমই ছিলো। কি থেকে কি যে হলো, কিছুতেই বুঝতে পারলাম না। আল্লাহ মেয়েটির কোন পরিক্ষা নিচ্ছেন, তিনিই ভালো জানেন। কোন ধনাঢ্য ব্যক্তি যদি একটু এগিয়ে আসতেন, তাহলে হয়তো মেয়েটির চিকিৎসা করানো সম্ভব হতো।

(এএস/এএস/জানুয়ারি ১৫, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test