E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বাঞ্ছারামপুরে দুই প্রতিবন্ধীর সংসার

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ০২ ১৫:৩৭:২৪
বাঞ্ছারামপুরে দুই প্রতিবন্ধীর সংসার

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী দম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। তাদের সংসারে রয়েছে একটি ফুটফুটে মেয়ে শিশু পায়েল (৩)।

সরেজমিনে উপজেলার মধ্যপাড়ায় গেলে দেখা যায়, শিশু পায়েল খাবারের জন্য কাঁদছিলো। প্রতিবন্দ্বী উজ্জ্বল মুখে কিছু বলতে না পারলেও স্ত্রী শেফালী জানায়, অর্থাভাবে গতকাল রাতে ৩ জনে আধপেট খেয়ে ঘুমান। ঘরে চাল-ডাল-নুঁন কিছুই নেই।ফলে,সকালে হন্যি হয়ে এ বাড়ি-সে বাড়ি করছে বাচ্চাটির জন্য দুটি রুটি জোগারের জন্য।

উজ্জল কুমার দাস (৩০)। সঠিক চিকিৎসার অভাবে ১০ বছর আগে বাক ও চলন শক্তি হারানো এই প্রতিবন্দ্বী সাত-সকালে উদোঁম গাঁয়ে মেয়ের ক্ষুধার তাড়না ভুলাতে পায়েলের সাথে শিশুর মতোই খেলা করছিল। ৫ বছর আগে বিয়ে করা পাশে বসা উজ্জলের স্ত্রী শেফালী দাস (২১)। কুঁজো এবং একটি পা অসাড়। কুঁজো বিধায় উঠবস করতে পারে না। থাকেন অন্যের দয়ায় একটি ছোট্ট এক রুমের ঘরে।

কিভাবে সংসার চলে জানতে চাইলে, প্রতিবন্দ্বী শেফালী জানায়, একটি ভাঙ্গা সেলাই মেশিন তাদের একমাত্র অবলম্বন। সেলাইয়ের কাজ জানা থাকায় বাম পা কাজ না করলেও ডান পা দিয়ে সেলাইয়ের কাজ করে কোনরকম খেয়ে না খেয়ে জীবন চলে।

জানা গেছে,৩দিন যাবত কোন কাজের অর্ডার নেই, তো-ঘরের চুলাও বন্ধ। অন্যদিকে মড়াঁর উপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে, সেলাই মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। মেরামতের টাকা পর্যন্ত নেই পরিবারটির কাছে। জানা গেছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের বিধায় তারা ভিক্ষে করতে যেতে পারছে না। যদি একটি সেলাই মেশিন কেউ দান করতো...কেউ যদি আমার না হয়, আমার স্বামীকে ডাক্তার-ওষুধ কিনে ভালো করে দিতো...আবেদনের সুরে জানায় শেফালী দাস।

এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর টিএসআই ডা.হাবিবুর রহমান জানায়, প্রতিবন্দ্বী দম্পত্তি যুগলকে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য করে তোলা সম্ভব।এর জন্য বেশকিছু অর্থ ব্যয় হবে।

কুমিল্লা হাউজিং সোসাইটিস্থ দর্পণ মানসিক হাসপাতালের চিকিৎসক গোলাম মহিউদ্দিন জীবন বলেন,‘শেফালীর কথা বলতে পারি না,তবে উজ্জল কুমার দাসকে স্থায়ীভাবে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।৩ মাসেই সেটি সম্ভব। খরচ পড়বে ৩০ হাজার টাকা।’

প্রতিবন্দ্বী দম্পত্তিটির প্রতিবেশী ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিন্টু রনজন সাহা জানায়,‘অসহায় পরিবারটিকে আমি অনেকদিন ধরেই জানি।অর্থাভাবে স্বামী বা স্ত্রী কেউই চিকিৎসা করাতে পারছে না।সমাজের বিত্তবানরা একটু এগিয়ে এলে ভালো হয়।প্রতিবদ্বী একটি পরিবার রক্ষা পায়।’

উল্লেখ্য,দুজনই প্রতিবন্দ্বী হওয়া সত্বেও তারা কোন রকম সরকারি ভাতা পাচ্ছেন না। জানা গেছে, ভাতার জন্য উপজেলা সমবায় অধিদপ্তরের অফিসে আবেদন করা হয়েছে ২ বছর আগে।

(এফএকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test