E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফাঁসি কার্যকরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

২০১৫ এপ্রিল ১১ ১৮:০১:২৫
ফাঁসি কার্যকরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

স্টাফ রিপোর্টার : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায় কার্যকর করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।

কামারুজ্জামানের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ও আদেশ চূড়ান্ত হয়েছে। শনিবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের এ আদেশের কপি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে। যার ফলে কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরে আর কোন বাধা নেই বলে জানা গেছে।

এছাড়া সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শনিবার কামারুজ্জামানের রায় কার্যকর হতে যাচ্ছে এমনটাই জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রায় কার্যকরের আদেশের কপি কারা কর্তৃপক্ষের পাঠানোর ফলে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

এদিকে কারা কর্তৃপক্ষের ডাকে কামারুজ্জামানের সঙ্গে শেষ দেখা করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। শনিবার বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে ঢাকা মেট্রো চ ১৩-৮৩৭ ও ঢাকা মেট্রো চ ১৩-৭৯১৭ নম্বরের দুইটি গাড়িতে করে ১৫ জন এবং বিকল্প পদ্ধতিতে আরো ৯ জন কারাগারে পৌঁছান। তবে কারা কর্তৃপক্ষ মোট ২০ জনকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেন। এরপর কামারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিকেলে ৫টা ১০ মিনিটে তারা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।

মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও তার নির্বাচনী এলাকা শেরপুর সদরসহ সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। শনিবার দুপুর থেকে এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।

এর আগে ৮ এপ্রিল কামারুজ্জামানের সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার আইনজীবীরা সাক্ষাৎ করেন। কামারুজ্জামানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির সাক্ষাৎ শেষে ওইদিন সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি আমাদের কাছে আইনের প্রভিশনগুলো জানতে চেয়েছেন, দেশে কী নজির রয়েছে তা জানতে চেয়েছেন। আমরা তাকে সাধ্যমতো জানিয়েছি। বাকি বিষয়গুলো নিতান্তই তার সিদ্ধান্তের বিষয়। তিনি প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি-না সে বিষয়ে ভেবে-চিন্তে কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।”

কামরুজ্জামানের প্রাণভিক্ষার বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত জানতে কেন্দ্রীয় কারাগারে গতকাল শুক্রবার দু`জন ম্যাজিষ্ট্রেট গিয়েছিলেন। তারা হলেন- তানভীর মোহাম্মদ আজিম ও মাহবুব জামিল। এছাড়া তাদের সঙ্গে ছিলেন- আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার উদ্দিন, ডিআইজি প্রিজন গোলাম হায়দার ও সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী। কামারুজ্জামান প্রাণভিক্ষা চাননি।

আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুর্নবিবেচনা) আবেদন খারিজ করে ৬ এপ্রিল রায় দেয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ। গত ৮ এপ্রিল ওই রায়ে স্বাক্ষর করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও বেঞ্চের তিন বিচারপতি।

তিন বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।

রিভিউ খারিজ করে দেয়া রায়ের কপি ওই দিনই ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করে সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা। পরে ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্টার আফতাব-উজ-জামান রায়ের কপি কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট জায়গায় ওইদিন বিকেলে পৌছেঁ দেন। রায়ের কপি পাওয়ার পরপরই তা আসামি কামারুজ্জামানকে পড়ে শোনানো হয় বলে কারা সূত্র জানায়।

গত ৫ মার্চ কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদনটি দাখিল করা হয়েছিল। গত বছরের ৩ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ কামারুজ্জামানকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখে রায় দেয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ৫৭৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশ করে আপিল বিভাগ। রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আসামিপক্ষের রিভিউ আবেদনের সুযোগ থাকায় সে অনুযায়ী তারা আবেদন দাখিল করে।

এর আগে একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। সে থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ১১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test