E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাঁচ হাজার টাকায় ই-টোকেন !

২০১৪ নভেম্বর ২০ ২২:১৬:০৪
পাঁচ হাজার টাকায় ই-টোকেন !

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : জাফর হোসেন চিকিৎসার জন্য রোগী নিয়ে ভারতে যাবেন। ছয়টি পাসপোর্ট হাতে নিয়ে ভারতীয় ভিসার ই-টোকেনের জন্য দালালদের কাছে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দালালরা বলছেন, ই-টোকেন পাওয়া যাচ্ছে না তাই পাসপোর্ট নেওয়া যাবে না।

কুষ্টিয়ায় বর্তমানে ভারতীয় ভিসার জন্য ই-টোকেন টাকা না দিলে পাওয়া যায় না। জেলার কয়েকটি সাইবার ক্যাফেসহ বেশ কয়েকজন দালাল ই-টোকেন প্রত্যাশীদের হয়রানি করে যাচ্ছেন।

ভুক্তভোগী বিশ্বজিৎ কুমার জানালেন, বিনামূল্যের ই-টোকেনের বাণিজ্য করে সংঘবদ্ধ ওই দালাল চক্র লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

বাংলাদেশী নাগরিকদের সহজে ভিসা পাওয়ার জন্যে ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ই-টোকেন দেয়ার ব্যবস্থা করলেও ভিসা প্রত্যাশীরা মনে করছেন এখন তা কঠিন হয়ে গেছে। চিকিৎসা, ভ্রমণের জন্য আত্মীয়তার কারণে যারা ভারতে যেতে চান তাদের দফায় দফায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বিধি মোতাবেক বিনামূল্যে ই-টোকেন পাওয়ার কথা থাকলেও সংঘবদ্ধ একটি চক্র টোকেন প্রতি চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করে নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে সীতা রানী জানান, আগে ভিসা করতে কম টাকা ও কম সময় লাগতো। এখন ই-টোকেন জটিলতার কারণে ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কিন্তু দালালদের মাধ্যমে চার/ পাঁচ হাজার টাকা খরচ করলে দ্রুত ই-টোকেনের বন্দোবস্ত হয়। সে কারণে আমরা বাধ্য হয়ে টাকা দেই।

কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ী হাসান আলী বলেন, গত মাসে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে চেয়েছিলাম। এ জন্য দ্রুত ভিসা পাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি দালাল চক্রকে ৭ হাজার টাকা দেই। কিন্তু সে ই-টোকেন দিতে পারেনি। পরে টাকা তুলতে হিমশিম খেতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে আকাশ কম্পিউটারের মালিক সাইদুল ইসলাম বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে সহজে কাজ করে দেই। মানুষ আসে তাই মানুষকে সাহায্য করি। জোর করে কাউকে কিছু চাপিয়ে তো দিচ্ছি না।

তবে মনিরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমি দুইবার ভারতে গিয়েছিলাম। সঠিক পথে ই-টোকেন পাওয়া সহজ নয়। দালাল ধরে ছিলাম। তাই প্রক্রিয়াটি সহজ হয়েছিল। টাকার বিনিময় ই-টোকেন সংগ্রহ এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

কিন্তু আরেক ভূক্তভোগি সিরাজুল ইসলাম জানালেন, তার ছেলে খুব অসুস্থ হওয়ায় ভারতে চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অনেক টাকা ছাড়া ভারতীয় ভিসার ই-টোকেন পাওয়া সম্ভব নয়। ই-টোকেন না পেয়ে মুমূর্ষ রোগী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। ই-টোকেন না পেয়ে অনেকে জরুরি প্রয়োজনে অবৈধ পথে ভারতে পাড়ি দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে স্বপন কুমার বলেন, এখন আর আগের মতো ই-টোকেন পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে ভিসা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে ই-টোকেন সংগ্রহ করে দেই। এটা কোন অন্যায় নয়।

(কেকে/অ/নভেম্বর ২০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test