E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মুম্বাইয়ের হাসপাতালে লাশের স্তূপ, নিচ্ছেন না স্বজনরা

২০২০ জুন ০১ ১৭:২৯:২১
মুম্বাইয়ের হাসপাতালে লাশের স্তূপ, নিচ্ছেন না স্বজনরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে সারি সারি মরদেহ পড়ে আছে। শয্যা সঙ্কটে রোগীদের মেঝেতে ঘুমানোর নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত কিনা সেব্যাপারে প্রমাণ দেখাতে না পারায় বিনা-চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন রোগীরা। প্রত্যেকদিন নতুন নতুন ওয়ার্ড করা হচ্ছে। কিন্তু সন্ধ্যা হতে না হতেই সেসব ওয়ার্ড করোনা রোগীতে ভরে যাচ্ছে।

ভারতে ভয়াবহ করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ায় দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে; ওপরের চিত্রটি দেশটিতে এই মহামারির প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠা মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ের করোনা হাসপাতালগুলোর। মুম্বাইয়ের হাসপাতালের কর্মীরা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় জনবলের অভাবে অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে পড়েছে।

সেন্ট্রাল মুম্বাইয়ের সরকারি কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সাদ আহমেদ বলেন, আমরা প্রত্যেকদিন নতুন নতুন ওয়ার্ড চালু করছি। কিন্তু দিনের শেষে কোভিড-১৯ রোগী দিয়ে সেগুলো পূর্ণ হচ্ছে। বর্তমানে এটা অত্যন্ত খারাপ অবস্থা। বর্তমানে সব ওয়ার্ডই কোভিড-১৯ ওয়ার্ড এবং ধারণক্ষমতার পুরোটাই রোগী দিয়ে পরিপূর্ণ।

প্রায় দুই মাসের কঠোর লকডাউন সত্ত্বেও ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত মুম্বাইয়ে করোনার ভয়াবহ প্রকোপ শুরু হয়েছে। দেশটির মোট করোনা রোগী এক চতুর্থাংশই মুম্বাইয়ের; বর্তমানে ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যেখানে পুরো ভারতে করোনা আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৯১।

করোনাভাইরাস মহামারির প্রাথমিক কেন্দ্র নিউইয়র্ক এবং ইউরোপ হয়ে উঠলেও বর্তমানে তা ঘুরছে ব্রাজিল এবং ভারতের দিকে। দুবর্ল স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো এবং নিম্নমানের জীবনযাত্রার কারণে করোনাভাইরাসের উর্বর জমি হয়ে উঠছে ভারত। গত বৃহস্পতিবার করোনায় মৃতের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ভারত (৫ হাজার ৪১৩)।

গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মুম্বাইয়ের সরকারি লোকমান্য তিলক হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে করোনাভাইরাসে মৃতদের দেহ পড়ে আছে। পাশের শয্যায় করোনা রোগীরা। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ডিনকে সরিয়ে দেয়। সম্প্রতি মুম্বাইয়ের কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালের ওয়ার্ডে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালের নার্স মাধুরী রামদাস গৈকার বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে মরদেহ স্তুপ হয়েছে। কারণ অনেক পরিবার সংক্রমণের ভয়ে মরদেহ নিতে অস্বীকার করেছে। ভাইরাসটির কারণে চারপাশে তীব্র ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে; যা ভারতে নতুন একটি অস্পৃশ্য শ্রেণি তৈরি করেছে। সংক্রমতি রোগী অথবা তাদের পরিবারকে প্রতিবেশি অথবা বাসার মালিকরা বের করে দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমরা মরদেহের সব কাগজপত্র প্রস্তুত করে রেখেছি। কিন্তু সেগুলো কেউই নিয়ে যাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুম্বাইয়ের সরকারি একটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় হাসপাতালের ইমারজেন্সি ওয়ার্ডে দ্বিগুণ রোগী আসছে। একটি অক্সিজেন স্টেশন থেকে বহু রোগীকে সরবরাহ করা হচ্ছে। হাসপাতালের একটি শয্যা কয়েকজন রোগী ভাগাভাগি করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ব্লুমবার্গ।

(ওএস/এসপি/জুন ০১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test