E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে জনসনের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল

২০২০ সেপ্টেম্বর ২৪ ১৪:০৫:৩০
৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে জনসনের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করেছে বৃহত্তম ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন। মডার্না, বায়োটেক এবং ফাইজারের পর যুক্তরাষ্ট্রে বড় পরিসরে ট্রায়াল শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এই ট্রায়ালে প্রায় ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন জনসনের ভ্যাকসিন গ্রুপের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার পল স্টোফেলস। তিনি জানিয়েছেন, তৃতীয় ধাপের এই পরীক্ষা থেকে এই ভ্যাকসিনটি কতটা কার্যকরী ও নিরাপদ তা জানা যাবে।

এছাড়া চলতি বছরের শেষের দিকেই এই ফলাফল চলে আসবে এবং আগামী বছর এই ভ্যাকসিনের ১ বিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে আরও তিনটি ভ্যাকসিন চলতি গ্রীষ্মের শুরুতেই তাদের ট্রায়াল শুরু করেছে। তবে জনসনের তৈরি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি অন্যদের চেয়ে আলাদা। এর বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে যা এটি নিরাপদ এবং কার্যকর প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক পরিচালনা এবং বিতরণ করা আরও সহজ করে তুলতে পারে।

করোনার এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের একটি শটেই রোগ প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হবে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানী পল। তিনি বলছেন, জনসনের বানানো ভ্যাকসিনের একটি ডোজই দেওয়া হবে স্বেচ্ছাসেবীদের।

আর এই ডোজের মাত্রা এমনভাবেই ঠিক করা হয়েছে যাতে একটি শটেই শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তিনি বলেন, এই ডোজে রক্তের টি-লিম্ফোসেইট কোষও সক্রিয় হবে। এই টি-কোষ সংক্রামিত কোষকে নষ্ট করে দিতে পারে। টি-কোষ অ্যাকটিভ হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

বায়োমেডিক্যাল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিএ আরডিএ) যৌথ উদ্যোগে এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে জনসন অ্যান্ড জনসনের রিসার্চ উইং জ্যানসেন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি।

সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালেক্স গোরস্কি জানিয়েছেন, ল্যাবরেটরিতে প্রাণীদের শরীরে এই ভ্যাকসিনের সেফটি ট্রায়ালে সুফল পাওয়া গেছে। ড্রাগ রেগুলেটরি কমিটির অনুমোদনে বৃহত্তর ট্রায়াল শুরু হয়েছে। মার্কিন সরকারের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে প্রায় ১শ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন।

কোভিড ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে জানুয়ারি থেকেই। গবেষকরা বলেছেন, সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে নিষ্ক্রিয় করে তাকে ল্যাবরেটরিতে বিশেষ পদ্ধতিতে পিউরিফাই করে এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট তৈরি হচ্ছে।

মানুষের শরীরে ঢুকলে ওই নিষ্ক্রিয় ভাইরাল প্রোটিন ‘মেমরি বি সেল’ তৈরি করবে। এই মেমরি বি সেলের কাজ হলো বাইরে থেকে শরীরে ঢোকা ভাইরাল প্রোটিন বা অ্যান্টিজেনগুলোকে চিহ্নিত করে তার প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করা। সেই সঙ্গে সক্রিয় হবে টি-কোষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এভাবেই ভাইরাসের মোকাবিলায় শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে উঠবে।

যুক্তরাষ্ট্রে কে আগে করোনার টিকা আনবে? এ নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতা চলছে। প্রথম সারির দুই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিই তাদের ভ্যাকসিনের তৃতীয় স্তরের ট্রায়ালে রয়েছে। দুই সংস্থার ভ্যাকসিনের প্রভাবই কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন তৃতীয় স্তরের সবচেয়ে বড় ট্রায়াল চালাচ্ছে মডার্না। যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবীর দেহে এই ভ্যাকসিনের প্রযোগ হয়েছে। মডার্না জানিয়েছে, তৃতীয় পর্বের ট্রায়ালের রিপোর্ট ক্রমশই ভালোর দিকেই যাচ্ছে।

তবে সবচেয়ে বড় খবর হলো, ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের শরীরেও এই ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে, কমবয়সীদের থেকেও কয়েকজন প্রবীণ স্বেচ্ছাসেবীর দেহে ভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির সংখ্যা অনেক বেশি।

অন্যদিকে, ফাইজার জানিয়েছে, জার্মান সংস্থা বায়োএনটেকের সহযোগিতায় ভ্যাকসিনের সুরক্ষা ও কার্যকারীতা নিশ্চিত করা গেছে। প্রায় ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে তাদের তৈরি ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

আরও বেশি মানুষের ওপরে এখন এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। অক্টোবরের মধ্যেই সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রেগুলেটরি কমিটির কাছে। এরপর কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলেই ভ্যাকসিন চলে আসবে দ্রুত।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test