স্টাফ রিপোর্টার : ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকারের ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছর ২০১৫-১৬ এর একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রে জানা গেছে, সঞ্চয়পত্র থেকে গৃহীত ঋণের ওপর সুদ বাবদ সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। ব্যাংকিং খাত থেকে নেয়া ঋণের ওপর সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা এবং বিদেশি উৎস থেকে গৃহীত ঋণের ওপর সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ক্যাশ অ্যান্ড ডেবট ম্যানেজমেন্ট কমিটির বৈঠকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। সূত্রমতে, গত অর্থবছরে বাজেটে নির্ধারিত নিট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিট ঋণ নেয়া হয়েছে ৬২ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ ৫২ হাজার ১৩ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।

এ সময় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেয়া ঋণের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে নেয়া ঋণের সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। এটি এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় ৬ শতাংশ কম। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সুদ ব্যয় ছিল ১৫ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। মূলত ট্রেজারি সিকিউরিটিজের ইয়েলড হারের নিম্নগতি এবং এ খাত থেকে ঋণাত্মক ঋণ নেয়ার কারণে ঋণের স্থিতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় কমে যাওয়ায় ব্যাংকিং খাতের ঋণ সুদ ব্যয় কমেছে।

গত অর্থবছর জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্পগুলো থেকে গৃহীত ঋণের ওপর সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৪৬ কোটি টাকা, যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ হাজার ১৫১ কোটি টাকা বা ৪৪ শতাংশ বেশি। জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের অস্বাভাবিক বিক্রি বাড়াই এর মূল কারণ।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিদেশি উৎস থেকে গৃহীত ঋণের ওপর সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা, যা বাজেটের ৯৪ শতাংশ। এ ব্যয় ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এ সুদ ব্যয় নির্ধারণে সাধারণত বিনিময় হারের প্রভাব থাকে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে টাকার বিনিময় হার মার্কিন ডলারের বিপরীতে এর আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছে। ফলে এটি বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় বাড়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বৈঠকে বলা হয়েছে, সরকারের সুদ ব্যয় বাড়ার অন্যতম কারণ হলো জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদ ব্যয় বৃদ্ধি। সঞ্চয়পত্রের কারণেই সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনা ও নগদ ব্যবস্থাপনায় চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সঞ্চয়পত্রের একটি আর্থসামাজিক প্রভাব রয়েছে। এটি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সুরক্ষা দিয়ে থাকে। পাশাপাশি এটি সরকারের জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয়।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭)