প্রবীর সাহা, পাবনা : পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার মধ্যে দিয়ে ভূয়া বিল ভাউচার ব্যবহার করে কোটি টাকা গায়েব করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ইতোমধ্যে,গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে কলেজটির জরুরি স্টাফ কাউন্সিলের মিটিংয়ে এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা, হাতাহাতি ও মিটিং বয়কটের ঘটনা ঘটেছে।

এ পরিস্থিতির মুখে কলেজের প্রায় ২৬ হাজার নিয়মিত শিক্ষার্থী ও অধিকাংশ শিক্ষকদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাঁরা অবিলম্বে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষর শাস্তি ও অপসারণ দাবি করছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অধ্যক্ষ ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে পাবনা সরকারী এডওয়ার্ড কলেজে যোগদান করেন। যোগদানের পরপরই শুরু হয় তাঁর দূর্নীতির মহোৎসব। শুরুতেই কলেজের বিভিন্ন বিভাগে মাস্টার্স ভর্তি ফরম বিক্রয়ে অতিরিক্ত ৬ লাখ টাকা আদায় এবং মাস্টার্স ফরম পূরণের সময় আরো ২০ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেন।

কলেজ ছাত্র সংসদের কার্যক্রম চালু না থাকলেও ছাত্র সংসদের তহবিল হতে সরকারি পরিপত্র অমান্য করে অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ছাড়া সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী কোনরুপ পিওন ও অফিস সহকারির নামে চেক ইস্যু করা সম্পূর্ণ অবৈধ সত্বেও তিনি কোন রুপ টেন্ডার ছাড়াই পিওন, কর্মচারী ও অফিস সহকারি এবং অধ্যক্ষ’র কতিপয় আস্থাভাজন শিক্ষকের নামে উন্নয়ন তহবিল থেকে ২৮ লক্ষ ২১ হাজার ৫৭৬ টাকা উত্তোলন করেন। এ ছাড়া সরকারি পরিপত্রে বিবিধ খাত নামে আলাদা কোন খাত না থাকলেও দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বিবিধ খাতের নামে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরেই ২৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায় করেন। এ ফান্ডের টাকাও তিনি ভ‚য়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে হাতিয়ে নেন।

২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরেই সরকার এডওয়ার্ড কলেজের নামে ১৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ আসে। কিন্তু টেন্ডার ছাড়াই ২/৩ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়। এ ছাড়া এক বছরে পরিবহন খাতে ৬৮ লক্ষ টাকায় গাড়ির টায়ার, যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামত দেখানো হলেও সিংহভাগ টাকা লুট করা হয়েছে। এ ছাড়া কলেজটির নিয়মিত ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে প্রতিবছরে প্রসপেক্টরস্ জন প্রতি ৫০ টাকা বিক্রিও অর্থ সহ কলেজটির অধ্যায়নরত প্রতিছাত্রের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ১শ টাকা করে জমা নেওয়া লাখ লাখ টাকা তসরুপ করেছেন।

এ ছাড়া যদিও সরকারি নিয়মানুযায়ী ২ লাখ টাকার অতিরিক্ত মালামাল কিনতে হলে পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হয়। কলেজ অধ্যক্ষ সে নিয়মটিও ভঙ্গ করেছেন ।

বর্তমানে এডওয়ার্ড কলেজ অধ্যক্ষ’র নিয়মবর্হিভূত নানা অনিয়ম,দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতায় কলেজটির সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ ও অস্থিরতা বিরাজ করছে। তথাপিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্র মূলক দাবি করছেন এডওয়ার্ড কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার।


(পিএস/এসপি/অক্টোবর ০৪, ২০১৭)