স্টাফ রিপোর্টার : মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নির্বাচিত হয়েছিলেন জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল। কিন্তু বিয়ের তথ্য গোপন রাখার অপরাধে তাকে বাদ দেয়া হয়। তার মাথার মুকুট এখন জেসিয়া ইসলামের মাথায়। আসছে নভেম্বরে চীনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্ব সুন্দরীদের মূল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন জেসিয়া।

এদিকে গতকাল বুধবার রাত থেকেই গুজব ছড়ায়, ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’র শিরোপা হারানোর লজ্জা নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এভ্রিল। খুব অল্প সময়েই এই গুজবটি ভাইরাল হয়ে যায়। ইউটিউব, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছবিসহ স্ট্যাটাস দিয়ে ছড়ানো হচ্ছে এই সুন্দরীর মৃত্যু খবর।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টির সত্যতা জানার চেষ্টা করতে গেলে খবরটি সম্পূর্ণই মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়। এভ্রিল বলেন, ‘কিছু মানুষ কোনো এক কারণে আমার পিছু লেগেই আছে। তারা যেন আর আমাকেই জীবিতই দেখতে চায় না। নইলে কারো মৃত্যুর মিথ্যে খবরও কী কেউ এভাবে ছড়াতে পারে! আমি আজকের এই ঘটনাটির মুখোমুখি না হলে জানতামই না, মানুষের এত বৈচিত্রময় ভয়ংকর রুপ থাকতে পারে।’

এভ্রিল আরও বলেন, ‘আত্মহত্যা করার মতো কিছু হয়নি। অনেক সংগ্রাম করে, অনেক বাঁধা পেরিয়ে আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাতেও আমি অভ্যস্ত। হতাশ হয়ে মরে যাবার মতো মেয়ে আমি নই। দেশের অসংখ্য মানুষ, গণমাধ্যমকর্মীরা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমাকে সাহস যুগিয়েছেন। সেই সাহসকে অনুপ্রেরণা করেই আমি সামনে এগিয়ে যেতে চাই। দয়া করে কেউ আমাকে নিয়ে কোনো গুজব ছড়াবেন না। আমি ভালো আছি।’

মা-বাবার দেয়া নাম ছিল জান্নাতুল নাঈম আমেনা। তিনি এখন এভ্রিল নামেই পরিচিত। এভ্রিল অল্প বয়সেই মোটরবাইক চালানো শেখেন। এরপর ধীরে ধীরে তা শখে পরিণত হয়। মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন নৈপুণ্য দেখাতে পারদর্শী তিনি। এ যানকে ঘিরেই পেয়েছেন নানা খ্যাতিও।

বাংলাদেশের হাইস্পিড লেডি বাইক রাইডার হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার। মোটরবাইকের বিখ্যাত ব্র্যান্ড ইয়ামাহার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর তিনি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এভ্রিল আলোচনায় এসেছিলেন ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’র বিজয়ী হিসেবে। আলোচনার পাশাপাশি সমালোচিতও বলা যায়। কারণ, এ আয়োজনটিতে বিজয়ী হলেও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের প্রথম শর্তই পূরণ করতে ব্যর্থ তিনি।

নিয়ম বলছে, প্রতিযোগীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। কিন্তু জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল তার বিয়ের কথা গোপন রেখেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এ বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

তবে গতকাল মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন এই তরুণী। সেখানে তিনি স্বীকার করে নেন তার বিয়ে ও ডিভোর্সের কথা। কিন্তু নিজের এ বিয়ের দায় তিনি নিতে চাননি। আঙুল তুলেছেন অশিক্ষিত পরিবার, বাল্য বিবাহে আক্রান্ত সমাজ ব্যবস্থার দিকে।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ০৫, ২০১৭)