নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর ফকিরা ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামে বাকপ্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকালের এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক জুয়েলকে হাতেনাতে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য ৫০ হাজার টাকা জরিমানার সিদ্ধান্ত দিয়ে আটক ইসমাইলকে ছেড়ে দিয়েছেন।

পরে ঘটনার শিকার ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানায় অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন ওরফে জুয়েলসহ তিন জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দয়ের করেন।

মামলার বাদী অভিযোগ করেন, চরফকিরা ইউনিয়নের একরামুল হকের ছেলে ইসমাইল হোসেন ওরফে জুয়েল (১৮) দীর্ঘদিন থেকে তার বাকপ্রতিবন্ধি কিশোরী মেয়েকে (১৭) বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছে। এ নিয়ে একাধিকার ইসমাইলের অভিভাবকদের জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি।

সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তার মেয়েকে একা পেয়ে বসতঘরে ইসমাইল ধর্ষণ করে। এসময় তিনিসহ (বাদী) বাড়ির লোকজন দেখে ফেলেন এবং ইসমাইলকে হাতেনাতে আটক করেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদে নেয়ার পর ছেড়ে দেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এ ঘটনার পর ওইদিন ইসমাইলকে এলাকায় গ্রাম্য আদালতে উপস্থিত স্থানীয় চরফকিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ওরফে লিটন ও সদস্য ইসমাঈল হোসেন ওরফে ভুট্টসহ স্থানীয় সমাজপতিদের কাছে সোপর্দ করা হয়। এসময় চেয়ারম্যান অভিযুক্ত যুবক ইসমাইলের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার সিদ্ধান্ত দেন। পরে ইসমাইলকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে চরফকিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটন জানান, সোমবার সন্ধ্যায় পরিষদে গ্রাম্য আদালতের তারিখ ছিল। এসময় তার এলাকার বাক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় আটক ইসামাইল নামে এক যুবকেও আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

তিনি ঘটনার বিবরণ শুনে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্যদের বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলেন আদৌ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কি না। ঘটে থাকলে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানাতে বলেন। কিন্তু তিনি অভিযুক্ত যুবককে ছেড়ে দিতে বলেননি এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার কোনো সিদ্ধান্তও দেননি।

এদিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বী জানান, বাক প্রতিবন্ধী এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে এ মামলা করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ০৫, ২০১৭)