শ্রীকান্ত পাল, জকিগঞ্জ (সিলেট) : সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জের ১৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৭টি প্রধান শিক্ষকের পদ ও ৭৪টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে ।

ফলে জকিগঞ্জ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ভূগছে শিক্ষিক সংকটে। দীর্ঘদিন থেকে এ সমস্যার সমাধান না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে জোড়াতালি দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। প্রয়োজনীয় শিক্ষকের অভাবে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি বাড়তি চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা। শিক্ষক সংকটে থাকা স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরাও এ নিয়ে হতাশ।

সোনাপুর, কামালপুর (খ), চৌধুরী বাজার, মঙ্গলপুর, রসুলপুর গৌছ আলী, বিলপার, বাটইশাইল, শহীদপুর, গর্দিশপুর, মাতারগ্রাম, সুরানন্দপুর, বড়চালিয়া, গঙ্গাজল (খ),কামালপুর (ক), জামালপুর, নওয়াগ্রাম (খ), নান্দিশ্রী, রতনগঞ্জ, ফুলতলী, চককোণাগ্রাম, খিলগ্রাম, নিদনপুর, শাহবাগ, পূর্বজামডহর, রঘুরাশি, নানকার, বেউর, মাদারখাল, পাঠানচক, তিরাশি, ঘেচুয়া, মুনশীবাজার, হাজীগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বিয়াবাইল, নগরকান্দি, ভটপাড়া, রঘুরচক, মির্জারচক, হোসনাবাদ, ষাইটশৌলা, উত্তরভাগ ও মামরখানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৬৭টি বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষক নেই।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার ১৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪১টি শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। তন্মধ্যে ৭৪টি সহকারি শিক্ষকের পদ শূণ্য থাকার পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ শূণ্য রয়েছে ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এছাড়া এক বছরের ডিপিএড প্রশিক্ষণে রয়েছেন আরোও ২০ শিক্ষক।

প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন সহকারি শিক্ষকরা। ফলে এ সকল বিদ্যালয়ে প্রশাসনিক শৃংখলাও ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষক স্বল্পতায় ফলাফলের দিক দিয়েও পিছিয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এ কারণে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় তুলনামূলক ভালো ফলাফল করতে পারছেনা জকিগঞ্জের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই অভিভাবকদের। তারা বলেন, শিক্ষক স্বল্পতায় কারণে নিয়মিত পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করতে পারছেনা। শিক্ষার্থীদের মেধা, মনন ও প্রতিভা বিকাশের উপযুক্ত স্থান প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীরা যদি এ রকম হোঁচট খায় তাহলে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হবে কোমলমতি ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। তারা শিক্ষক সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিজ মিঞা বলেন, শিক্ষক স্বল্পতা দূর করতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক নেই সেগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

(এসপি/এসপি/অক্টোবর ০৬, ২০১৭)