চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ তথা চাঁদপুরের সঙ্গে ঢাকার দুরত্ব কমাতে, সময় বাঁচাতে ও মতলববাসীর স্বপ্নপূরণে নির্মাণ করা হচ্ছে মতলব সেতু। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট ব্যয়ে শেষ হচ্ছে না এই সেতুর নির্মাণ কাজ। ফলে সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে আর এতে ব্যয়ও ৮ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে প্রায় ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর মতলব সেতু নির্মাণে প্রকল্প হাতে নেয় চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সেতু নির্মাণে মোট ৮৪ কোটি টাকার মধ্যে মূল সেতুর ব্যয় ৫৬ কোটি টাকা ও জমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সেতুর কাজ শুরু হয় এবং শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল ২০১৭ সালের ৩০ জুন। স্থানীয় এমপি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বীর বিক্রমের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সেতুর কাজ দ্রুত শুরু হলেও অ্যাপ্রোচ সড়কের প্রোটেক্টিভ ওয়ার্কের জন্য নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার কারণে সময় ও অর্থ ব্যয় দুটিই বেশি লাগছে। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৩০৪ দশমিক ৫১ মিটার দৈর্ঘ্যরে আরসিসি সেতু, অ্যাপ্রোচ সড়কের ওপর ৩০.৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু, ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি আরসিসি কালভার্ট, ১০ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি আরসিসি আন্ডারপাশ, ১.৮৬ কিলোমিটার সার্ফেসিং এবং নতুন পেভমেন্ট তৈরি, ৯ দশমিক ৩৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ৩.২৩ লাখ ঘন মিটার সড়ক বাঁধ, জিও টেক্সটাইল, টো-ওয়াল, সার্ফেস ড্রেন, দুটি ইন্টারসেকশন আইল্যান্ড এবং সাইন, সিগন্যাল ইউটিলিটি সিফটিংসহ আনুসঙ্গিক কাজ। সেতুতে ১০. ২৫ মিটার প্রস্থের ৭টি স্প্যান থাকবে। সেতুর দুপাশে অ্যাপ্রোচ সড়কটি থাকবে ১.৮৬ কিলোমিটার।

চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাজহারুল হক জানান, মূলত অ্যাপ্রোচ সড়কের প্রোটেক্টিভ ওয়ার্কের জন্যই এক বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। অ্যাপ্রোচ সড়ক ছিল ৯ হাজার স্কয়ার মিটার। এখন তা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৬২ হাজার স্কয়ার মিটার। এ কারণেই এক বছর সময় ও ৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, ২৮ কোটি টাকা জমি অধিগ্রহণ বাবদ ধরা হয়েছিল। সেখান থেকে খরচ হয়েছে ২৬ কোটি টাকা। আশা করছি আগামী ২০১৮ সালের জুন মাসেই সেতুর কাজ শতভাগ শেষ হবে।

উল্লেখ্য, মতলব উত্তর-দক্ষিণ উপজেলাকে ধনাগোদা ও মেঘনা নদী বিভাজন করেছে। এ সেতুটি নির্মিত হলে দুটি উপজেলার প্রায় ৮ লাখ মানুষের চলাচল ও দক্ষিণাঞ্চলের নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল ও চাঁদপুর সদর, হাইমচর, শাহরাস্ত, ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার মানুষের ঢাকা যাতায়াতের পথ সহজ হবে। এছাড়া এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহন, চাঁদপুর থেকে ইলিশসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর মাছ ঢাকায় দ্রুত পৌঁছানো ও পণ্য আনা-নেয়া সহজ হবে।

(ইউএইচ/এসপি/অক্টোবর ০৯, ২০১৭)