রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : চরবংশীর খাসের হাট এলাকা থেকে স্বপ্না বেগম (৪৮) ভোর ছয়টায় তার জ্বরাক্রান্ত নাতিকে নিয়ে ও  সকাল সাড়ে আটটায় চরমোহনা গ্রাম থেকে মমিন পাটোয়ারী (৫৫) নিজেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন।

সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত কোন ডাক্তার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এরা কি ডাক্তার নাকি অন্য কিছু? আমরা ১৫-১৮ জন রোগী ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করছি আর তাদের আাসার নাম গন্ধ পর্যন্ত নেই। হাসপাতালের এসব অনিয়ম দেখার কি কেউ নেই? অন্য দিকে হাসপাতালেরর জরূরী বিভাগের সামনে প্রতিদিন কুকুর উপদ্রবে আতংকে থাকেন রোগী ও হাসপাতারের কর্মচারীরা।

সকাল সাড়ে নয়টায় ডাঃ আনোয়ার আজাদ জরুরী বিভাগে আসলে কুকুর প্রসঙ্গে বলেন, কুকুর জরুরী বিভাগের সামনেই নয়, মাঝে মাঝে ভিতরে ঢুকেও আমরা কেমন আছি তা দেখে যায় বলে হাস্যরস করেন।

শনিবার সকালে (সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নয়টা) লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার একমাত্র চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরজমিনে গেলে এ চিত্র দেখা যায়।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বিল্লাল হোসেন, স্বপ্না বেগম ও মমিন পাটোয়ারী জানান, শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দুরের গ্রাম থেকে উন্নত চিকিৎসা পেতে ভোর ৬টায় রায়পুর সরকারি হাসপাতালে চলে আসি। সাড়ে নয়টা পর্যন্ত কোন ডাক্তারের দেখা পাইনি। আমাদেরমত আরো ১৭-১৮জন রোগী দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে প্রাইভেট হাসপাতালে চলে গেছেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ডাঃ আনোয়ার আজাদ নামে একজন ডাক্তার এসে জরুরী বিভাগে বসেন। কয়েকদিন আগেও এসে এ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

হাসপাতাল সংলগ্ন পান দোকানদার মিহির কুরী জানান, টিএইচওর অনুপস্থিতিতে প্রায় সকল ডাক্তারই সরকারী নিয়ম না মেনে তাদের ইচ্ছেমত আসেন। ডাক্তারের স্বল্পতা থাকার পরও কর্তব্যরতদের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম- অব্যবস্থাপনা যেন হাসপাতালতে ঘিরে ধরে আছে।

এ বিষয়ে কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ অনোয়ার আজাদ বলেন, আমি একজন ছোট ডাক্তার। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শায়েলা জাহান শিমু ম্যাডাম কোথায় আছেন আমি নিজেও জানি না।

কুকুর প্রসঙ্গে বলেন, কুকুর জরুরী বিভাগের সামনেই নয়, মাঝে মাঝে ভিতরে ঢুকেও আমরা কেমন আছি তা দেখে যায়। হাসপাতালের নৈশ প্রহরী নিয়ে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বিধায় নৈশ প্রহরী হিসেবে কুকুরই আমাদের প্রহরা দিচ্ছে।


(পিকেআর/এসপি/অক্টোবর ১৫, ২০১৭)