ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে প্রায় ১৭ কিঃমিঃ দুরে আরাজী ঝাড়গাঁ গ্রামে অবস্থিত জেলার সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গড়ে ওঠা একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুণর্বাসন কেন্দ্র। ২০০৮ সালে মাত্র ৪০ জন প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে একটি ছোট্ট কুড়ে ঘরের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পথ চলা। বর্তমানে এর পরিধি বেড়েছে অনেক। জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে ৩ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন থেকে শিক্ষা নিতে আসে প্রতিবন্ধী শিশুরা।

ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৩৬৯ জন। কুড়ে ঘরটি হয়েছে টিন সেড (আধা পাকা),যাতায়াতের জন্য রয়েছে দুটি থ্রিহুইলার, কিন্তু বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে সরকারিকরণের জন্য আবেদন করলেও আজও সে আবেদন আলোর মুখ দেখেনি।ফলে আর্থিক সংকটের কারণে যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে জেলার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধীদের এ বিদ্যালয়টি।

৩৬৯ জন প্রতিবন্ধী শিশুদের মনস্তাত্বিক বিকাশের ২৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বিনা বেতনে পাঠদান করাচ্ছেন। এক একর দশ শতক জমির উপর বিদ্যালয়টি থাকলেও খেলা-ধুলার সরঞ্জামাদি না থাকায় শিক্ষা নিতে আসা শিশুরা শুধু দৌড়-ঝাপ করেই সময় কাটায়।আবাসন ব্যবস্থা না থাকলেও দূর-দূরান্তের থেকে শিক্ষা নিতে আসা অন্তত ৩৫ জন প্রতিবন্ধী শিশু পরিচালকের বাসায় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে।রয়েছে শ্রেণী কক্ষ সমস্যাও।দশম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম থাকায় ৫টি ভাংগা-চোরা টিনসেড রুমে ২টি শ্রেণীর ক্লাশ একসঙ্গে নিতে হয়।

বিদ্যালয়টি দ্রুত সরকারি করণ না করা হলে আর্থিক দৈন্যতায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। এলাকাবাসি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিবন্ধী শিশুদের উন্নয়নে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানটি বাঁচাতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুণর্বাসনের পরিচালক আমিরুল ইসলাম জানান,শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য মাত্র দুটি থ্রি-হুইলার গাড়ি রয়েছে। যা বাচ্চাদের জন্য যথেষ্ট নয়।তাছাড়া স্কুলের পাঠদান কক্ষের দরজা ঠিকমত নেই। শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিনা বেতনে দিনের পর দিন শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন।

ইতিমধ্যে স্কুলটি পরিদর্শন করে গেছেন স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিজিবি অধিনায়কসহ অনেকেই। কিন্তু স্কুলটি তেমন কোন সুবিধার আলো দেখিনি।সকলে পাশে দাঁড়ালে স্কুলটি পরিপূর্ণ ভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাবে বলে তিনি জানান।

(এফআইআর/এসপি/অক্টোবর ১৬, ২০১৭)