নীলফামারী প্রতিনিধি : দেশে বিভিন্ন গনমাধ্যমে গত সোমবার ও মঙ্গলবার ‘অর্থের অভাবে মেধাবী সঞ্জিতের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হবার পর মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ৬০ হাজার ৫০০ টাকা এসেছে। অনেকে তার মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনার ব্যয় বহনের আশ্বাসও প্রদান করেছেন।

এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পক্ষে তার ব্যক্তিগত সহকারী আবুল কালাম আজাদ মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় মোবাইল ফোনে সঞ্জিততের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার লেখা পড়ার খরচ বহনে সহায়তা করবেন। এ জন্য সঞ্জিতকে ঢাকায় গিয়ে মন্ত্রী মহাদয়ের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে।

এদিকে সঞ্জিত জানান, তার ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ভর্তির জন্য যারা নগদ অর্থ দিয়ে সাহার্য্য প্রদান করেছেন তারা হলেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম ১০ হাজার, নীলফামারী শাখামাছাহাট ফেসবুক গ্রুপের প্রধান ফজলুল হক খোকন ১০ হাজার , দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট তুষার কান্তি রায় ১০ হাজার, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের নীলফামারী শাখার প্রিন্সিপাল সাহিদ আব্দুল্লাহ আল মাহদী ১০ হাজার, নীলফামারী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ দেবী প্রসাদ রায় ৫ হাজার সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে সহায়তা প্রদান করেছেন তাকে।

নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহ্ আপেল ও তার বড় ভাই মেহেদী হাসানের সহায়তায় মেডিকেল কলেজের লেখা পড়া ব্যয়ভার বহন করার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকার অরিয়ম ফার্মা নামের একটি ঔষধ কোম্পানী ৫বছরের জন্য তাকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করবেন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহামাদ খালেদ রহীদ বলেন, দেশের বিভিন্ন গনমাধ্যমে খবরটি পড়ে তাৎক্ষনিকভাবে সঞ্জিত কুমার রায়কে সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং মঙ্গলবার সকালে সঞ্জিত রায়কে অফিসে ডেকে এনে তার ভর্তির জন্য ১০ হাজার টাকা প্রদান করি।

এদিকে সঞ্জিত রায়ের মা যশোদা রায় তার ছেলের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির টাকা সহায়তা করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেছেন ।

উল্লেখ্য, পিতৃহারা সঞ্জিত উচ্চশিারেে ত্র তার পারিবারিক অসচ্ছলতায় প্রধান বাধা পড়েছিল। সে এবার ঢাকা সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে মেধা তালিকায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। মেডিকেলে ভর্তির তার রোল নম্বর ১৯৩৪০৫। ভর্তির সিরিয়াল নম্বর ৩৫১। কিন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্তির প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার টাকা প্রয়োজন। ভর্তির শেষ তারিখ ১৯ অক্টেবর।

নীলফামারীর জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের বাদিয়ারমোড় গ্রামের মৃত হিরেন্দ্র নাথ রায় ও অসহায় মা যশোদা রায়ের দুই মেয়ে দুই ছেলের মধ্যে সবার ছোট সঞ্জিত।

তার বাবা ২০০৯ সালের ২৯ এপ্রিল জটিলরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অর্থের অভাবে মৃত্যু বরন করে। মা দিন মজুরী করে ও মাত্র ৩৩ শতক জমির ফসল আবাদ করে সংসার চালায়।

অর্থাভাবে বাবার চিকিৎসা করাতে না পেরে বাবাকে হারানোর পর সঞ্জিত শপথ নেয় সে ডাক্তার হয়ে অসহায় গরীব দুখির চিকিৎসা সেবা করবে।


(এমআইএস/এসপি/অক্টোবর ১৮, ২০১৭)