সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : স্ত্রীর নামে জমি লিখে না দেওয়ায় আব্দুল হাকিম গাজী নামের এক ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গলায় দড়ি বেঁধে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার প্রচার চালানো হয়েছে।

বুধবার সকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী হাড়দ্দহ গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রামবাসি মৃতের স্ত্রী আন্না খাতুনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

মৃত আব্দুল হাকিম গাজীর বাবার নাম মৃত সুজাউদ্দীন গাজী।

হাড়দ্দহ গ্রামের গোলাম সরোয়ার জানান, তার চাচাত ভাই আব্দুল হাকিমের কোন সন্তান হতো না। আন্না খাতুন তার চতুর্থ স্ত্রী। দুই বিঘা সম্পত্তি লিখে দেওয়ার শর্তে কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের হাকিম গাজীর মেয়ে আন্নাকে বিয়ে করেন হাকিম। জমি লিখে না দেওয়ায় তাদের বাড়িতে প্রতিদিন ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। মঙ্গলবারও তাদের বাড়িতে ঝগড়া হয়। এ সময় আন্না খাতুনের আগের পক্ষের ছেলে রুমান (১০) ও বোন রোকেয়া খাতুন তাদের বাড়িতে ছিল।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল হাকিমের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। বোন রোকেয়ার সহায়তার হাকিমকে হত্যার পর লাশের গলায় দড়ি বেঁধে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ঠিকমত উঁচু করতে না পারায় হাকিমকে ঘরের মেঝেতে হাটু গেড়ে বসা অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়। পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে নির্যাতনের ফলে নষ্ট হওয়া লুঙ্গিও। ঘটনার পরপরই আন্নার বোন রোকেয়া ও রুমন পালিয়ে যায়। আন্না খাতুন ও পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়। তার দেহ তল্লাশি করে কোমরের নীচে পেটিকোটের মধ্যে লুকিয়ে রাকা দু’টি মোবাইল সেট, আড়াই হাজার টাকা, এক জোড়া সোনার দুল ও একটি নাকফুল উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃত আন্না খাতুনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারুফ আহম্মেদ জানান, বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে আব্দুল হাকিমের লাশ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মৃতের স্ত্রী গণধোলাই এর শিকার আন্না খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ প্রহরায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


(আরকে/এসপি/অক্টোবর ১৮, ২০১৭)