চাঁদপুর প্রতিনিধি : বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কক্সবাজার নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযুক্ত চাঁদপুরের দুই সরকারি কর্মচারীর কথামতো দুই বান্ধবী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে এখন মুমূর্ষু অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ অক্টোবর বুধবার সকালে চাঁদপুর শহরের জেলা প্রসাশক কার্যালয়ের সামনে।

জানা যায়, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পিয়ন জয়নাল আবেদীন টিটু ও গাড়ি চালক মাহবুব আলম চৌধুরীর প্রেম প্রতারনার শিকার রেবেকা সুলতানা ও তার বান্ধবী সুমি আক্তার। তারা দু’জন বুধবার সকালে চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যানঘাটা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিষপান করলে এক সিএনজি স্কুটার চালক তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করান।

হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসারত অবস্থায় রেবেকা সুলতানা জানায়, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পিয়ন জয়নাল আবেদীন টিটু ও গাড়ি চালক মাহবুব আলম চৌধুরী তাদের দু’বান্ধবীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কক্সবাজারে নিয়ে ধর্ষণ করার বিষয়টি স্থানীয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তাদের দু’জন টিটু এবং মাহবুবকে তাদেরকে বিয়ে করার কথা বলেন। এমন কথার জবাবে জয়নাল আবেদীন টিটু বিয়ের করার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে রেবেকা সুলতানাকে বিষপান করে মরে যাওয়ার কথা বলেন।

রেবেকা সুলতানা জানায়, তাদের কারনে যখন আমাদের জীবনে কলঙ্কের দাগ পড়েছে, এখন তারা আমাদের বিয়ে না করে আমাদের সাথে প্রতারনা করেছেন সেখানে আমরা আর কোন পথ দেখতে না পেয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করতে চেয়েছি।

তারা আরো জানায়, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর আমাদের পরিবারের লোকজনের কাছেও আমরা অবহেলিত হয়েছি। তাই আমরা বুধবার সকালে বাবুরহাট থেকে একটি সিএনজি স্কুটারে করে ডিসি অফিসের সামনে এসে স্কুটারে বসেই বিষপান করি। তখন আমাদের মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটপট করে বমি হলে সিএনজি স্কুটার চালক হাসপাতালে এনে ভর্তি করান।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পিয়ন জয়নাল আবেদীন গাজী টিটুর সাথে মতলব দক্ষিণের উপাদী গ্রামের রেবেকা সুলতানা (২৫)-এর সাথে আদালতে আসা যাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি রেবেকা সুলতানার সাথে জয়নাল আবেদীন টিটুর প্রথম পরিচয়। আর ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সুমি আক্তার পাসপোর্ট করার জন্য আসলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচতলায় গাড়ি চালক মাহবুব আলম চৌধুরীর সাথে সুমি আক্তারের পরিচয় হয়। ওই পরিচয়ের সুবাদে ফোনালাপ ও প্রেমের সম্পর্কের সৃষ্টি হয়।

এদিকে সুমি আক্তারের মাতা হোসনেয়ারা বেগম জানায়, তাদের এমন ঘটনার কথা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে ঘোড়ামারা আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদেরকে সেখান থেকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। তাদের কারণে ওই এলাকার মানসম্মানে আঘাত লেগেছে বলে তাদের পরিবারের সেখান থাকতে দিবেনা বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাই মেয়ে এবং পারিবারিক জীবনে এমন অশান্তি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এ ব্যাপারে জয়নাল আবেদীন গাজী টিটুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি তাকে কখনো বিয়ের করার কথা বলিনি। বরং সে আমাকে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। আমি তাকে বিষপান করার কথা বলিনি। যদি এমন কথা বলে থাকি তাহলে আমার শাস্তি হবে।


(ইউএইচ/এসপি/অক্টোবর ১৯, ২০১৭)