স্টাফ রিপোর্টার : সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় ঢাকা। কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও কোমর ছুঁই ছুঁই। ফলে নগরবাসীর দুর্ভোগের সীমা থাকে না। রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে অবৈধভাবে দখল হওয়া খালগুলো উদ্ধারে দ্রুতই অভিযানে নামছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। ইতোমধ্যেই জেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে এসব খালে থাকা অবৈধ স্থাপনার একটি তালিকা করা হয়েছে। অস্তীত্বহীন একটিসহ চারটি খালে ৩২৪টি অবৈধ স্থাপনা তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

রাজধানীর খালগুলোর অন্যতম নন্দীপাড়া-ত্রিমোহনী, দক্ষিণগাঁও-ত্রিমোহনী, ডিএনডিবাধ বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ঘোপদক্ষিণ খাল। খালগুলোর বিভিন্ন স্থান অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে। আর খালে থাকা অবৈধ স্থাপনার তালিকা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের তালিকানুযায়ী, নন্দীপাড়ার দুই খাল ওয়াসার, ডিএনডির খাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের এবং অপরটি ডিএসসিসির। এই খালগুলোর বিভিন্ন স্থান দখল হয়ে আছে। কেরানীগঞ্জ, ধানমন্ডি ও রমনা সার্কেলের (রাজস্ব) তথ্যানুযায়ী প্রস্তুতকৃত তালিকায় নন্দীপাড়ার খালে ১৫৪টি, শুভাট্যা খালে ৫২, কামরাঙ্গীচর খালে ১০, কালুনগর খালে ৩১, রামচন্দ্রপুর ও সুলতানগঞ্জে ৪৮টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ঘোপদক্ষিণ খালটি এখন অস্তিত্বহীন। নন্দীপাড়ার খালে ৩৫টি ব্রীজ ও সাকো রয়েছে। তবে আবর্জনায় পূর্ণ এসব খালে পানি প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৬ সালে এই তালিকার কাজ শুরু হয়। সম্প্রতি এটি আবারও হালনাগাদ করে পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে। এমন একটি তালিকা সিটি কর্পোরেশনের কাছে এসেছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

অন্য দিকে কয়েকমাস আগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ডিএনসিসির সুপারেন্ট ইঞ্জিনিয়ার শরিফ উদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শন করা ডিএনসিসি এলাকার খালের চিত্র প্রোজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরছেন।

শরিফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা মহানগরীতে মোট ৪৩টি খাল রয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি খালের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। এ ছাড়া মহানগরীর সকল খালের মালিকানায় রয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসক। ডিএনসিসি এলাকায় ২৩টি খাল রয়েছে, যার সবগুলো খাল দখলে চলে গেছে। ওই সকল খাল দিয়ে নদী পর্যন্ত পানি পৌঁছাতে পারছে না। এ কারণে রাজধানীতে অল্প বৃষ্টিতে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, এ জন্য স্বল্প মেয়াদী হিসেবে ওয়াসা ও জেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে খালের উপর বিদ্যমান সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে এবং বর্ষা মৌসুমের পূর্বেই খালের ময়লা, আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। আর দীর্ঘ প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করা হয় ওয়াসা ও জেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে সকল খালের প্রকৃত সীমানা চিহ্নিত করে মূল প্রশস্ততায় খাল পুনঃখনন ও পাড় সংরক্ষণ করা।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২০, ২০১৭)