কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় চলতি বছরে প্রায় ২হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। গত কয়েকদিনের নিন্মচাপ, অতিবৃষ্টি ও হালকা বাতাসে কৃষকদের এ ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, কুষ্টিয়া বৃষ্টি ও হালকা বাতাসে জেলার প্রায় ২হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় ৬২০হেক্টর, দৌলতপুর উপজেলায় ৭০০হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় ২০৫হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় ২৭০হেক্টর, খোকসা উপজেলায় ১৮০হেক্টর এবং কুমারখালী উপজেলায় ২৫হেক্টর রোপা আমন ধান।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কৃষক বেলাল হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে আমি ২বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছি। অতি বৃষ্টির কারনে আমার সব ধানগাছ কাঁচা অবস্থা পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। গো-খাদ্য করা ছাড়া আমার আর উপায় নেই।

তিনি আরো জানান, পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য ধান গুলো চাষ করেছিলাম। তবে সবই জলে গেলো।

একই উপজেলার সদরপুর গ্রামের কৃষক বরকত আলী, আশিকুল ইসলাম, হামিদুল ইসলাম, মহিবুল ইসলাম ও ইয়ারুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আমাদের মাঠের ধানের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি। এখন ধানের যে অবস্থা তাতে কেটে নিয়ে গরুকে খাওয়ানো ছাড়া কোন
উপায় নেই।

আমবাড়ীয়ার চাষী হাবিবুর রহমান জানান, নিজে জমিতে ধান চাষ করে সংসার চালাবো এই আশায় জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করেছিলাম। বৃষ্টির কারনে ধানগুলো সবই নষ্ট হয়ে গেছে।

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, বৃষ্টির কারনে কৃষকের ক্ষতি হয়েছে তা পুশিয়ে নেওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ে সকলকে কৃষকদের পরামর্শের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাময়িক জলাবদ্ধতায় যে সকল জমিতে ক্ষতি হতে পারে সেসব জমির পানি দ্রুত শুকিয়ে নিতে বলা হয়েছে। ৮০% ধান পরিপক্ক
হলে কর্তন করতে এবং যেসব জমির ধান বৃষ্টি ও বাতাশে হেলে পড়েছে সেগুলোর ৪-৫ টা ধানের গোছা একত্রে বেধে দিতে বলা হয়েছে।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা খুরশীদ আলম জানান, গত কয়েকদিনের নিন্মচাপ, অতিবৃষ্টি ও হালকা বাতাশে জেলার প্রায় ২হাজার হেক্টর রোপা আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির কারনে ফুল অবস্থায় যেগুলো পড়েছে সেগুলোর ক্ষতি হবে। তবে বৃষ্টির কারনে নাবি ধান গুলোর উপকার হবে সেই সাথে পানির অভাবে যেগুলো ফুল বের হচ্ছিলো
না বৃষ্টিতে সেগুলোর জন্য ভালো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, সব মিলিয়ে বৃষ্টিতে কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে ভালো ফলনের মাধ্যমে তা পুশিয়ে উঠতে পারে।

(কেকে/এসপি/অক্টোবর ২৪, ২০১৭)