কফিল উদ্দিন বাহাদুর


এই হামলায় বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থিতদের হতাশ হওয়ার কারণ নাই! এমন বলারও দরকার নাই যা অাওয়ামীলীগ এসব ঘটনা করিয়েছে! অনলাইন অফলাইনে এই ইস্যূকে কেন্দ্র করে গরম করার দরকার নাই। অাগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ইস্যূটাকে নিয়ে হৈ রৈ করে গ্রামের, শহরের চায়ের কাপে ঝড় তোলার মোটেই দরকার নাই।

অামার ব্যক্তিগত এই অভিমতটি কেন্দ্রীয় বিএনপি ছাড়া অন্যান্য নেতা-কর্মী বা সমর্থিতদের প্রতি। কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের বাদ দেয়ার কারণটা হল - তারা সব কিছু জানে এবং বুঝে শুনে সবকিছু প্ল্যান করে এসব নাটকের রচনা করেছে। তবে বার বার এসব ভুল নাটক করে বিএনপি রাজনীতির মাঠে হোঁচট খায়। যা জনগণের কাছে হাস্যকর দলে পরিণত হয়েছে।

রিকসাওয়ালাও অাজকাল দশ টাকার এমবি কার্ড রিচার্জ করে ফেসবুক বা অনলাইন জগতে বিচরণ করে। পড়তে পারুক বা না পারুক মোটামোটি ধারণা নিয়ে ফেলে জাতীয় প্রত্যেকটি রাজনৈতিক ইস্যূ সম্বন্ধে। পাশাপাশি টিভির পর্দা তো অাছেই। চায়ের চুমুকে হুজুগে চিন্তা না করে পাড়ার মুরুব্বীও মুখে বুড়ো অাঙ্গুল ঠেকিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। অাজ অার মানুষ বোকা না।

নাটকটা কি বুঝাতে চেয়েছি? এবার অাসুন - সামনে নির্বাচন। অাওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যূতে বিশ্বে তাঁর জয় জয়কার। বিশ্ব মিডিয়ায় সুনাম বয়ে যায়। টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে সারাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগিয়েছে যা চোখে পড়ার মতন। যা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। যারা এক সময় এই দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলত তারাও হিংসায় মরছে! সাধারণ জনগণের দাবি পূরণে লড়ে যাচ্ছে অাওয়ামীলীগ সরকার। দেশকে বিশ্বের দরবারে ডিজিটাল ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজের কমতি নেই। সব সফলতাকে সামনে রেখে অাগামীতে গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচনে লড়াই করে অাবারো ক্ষমতায় এসে এই স্বপ্নের সোনার বাংলা পরিপূর্ণ রুপ দিতে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

নাটকের অাসল কাহিনী বলতে গিয়ে জনগণের সরকারের সুনাম করে ফেললাম! যা তাদের কাছে বিরক্ত লাগতে পারে! এখানে অাপনারা যারা সচেতন বিএনপি সমর্থক অাছেন তারা গভীরভাবে যোগ বিয়োগটা করলে অাসল রেজাল্ট তারাই বের করতে পারবে।

খালেদা জিয়া বেশ কয়েকটি মাস দেশেই ছিল না। এখন হঠাৎ এসে রোহিঙ্গা দেখতে যাবে! ভাল কথা! উদ্দ্যেশ্য তো একটা মানবতার খাতিরে রোহিঙ্গাদের পাশে যাওয়া!! কিন্তু ওনি এই বয়সে, এত কষ্ট করে বিমানে না এসে গাড়িতে করে অাসার কারণ কি? সব সময় নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা জাতির সামনে তুলে ধরেন! তো এত রিস্ক নিয়ে গাড়ি বহর কেন? প্রশ্নটার উত্তর বিএনপির সমর্থিতরা অনায়াসে বের করতে পারবে। মানবতার ব্যানারকে সামনে রেখে রাজনীতি করে যাচ্ছে। যা বিএনপি সৃষ্টিলগ্ন থেকে করে অাসছে।

হামলা! কার উপর? তাও তাদের বহরেই!! অথচ খালেদা জিয়ার গাড়িতে কিছুই হয়নি । তাদের নেতাদের গাড়ির কিছু হয়নি। কেউ অাহতও হয়নি। শুধু মিডিয়ার গাড়িতেই হামলা! বিএনপি সমর্থিতদের কাছে প্রশ্ন, এই কেমন হামলা? শুধু মিডিয়ার উপর কেন? উত্তরটা অাপনারাই পারবেন বের করতে। এসব হিসেব করতে ক্যালকুলেটরের দরকার নাই। মিডিয়াকে অাঘাত করা মানে বিশ্বকে জানিয়ে দেয়া । মিডিয়াকে ক্ষেপিয়ে তোলা!

রিজভী সাহেব কেন্দ্রে রাজনীতি করেন। অনেক কৌশলে কথা বলা দরকার। কিছু হলেই অাওয়ামীলীগ করিয়েছে বলে প্রেস ব্রিফিং করে! অাজকের এই ঘটনাও অাওয়ামীলীগের পিঠে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করল। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ওনি অাওয়ামীলীগের উপর সবকিছু চাপিয়ে দিয়ে মজা পান!

একটা বিষয় স্বাভাবিক বুঝা যায়। মিডিয়া দল করেনা। মিডিয়া নিরপেক্ষ। সুতরাং তাঁদের উপর কেন হামলা? বিএনপি নেতাদের উপর নয় কেন? তো বুঝা যায় তা সম্পূর্ণ রাজনীতি।

নাটক, সরকারের সুনাম, রিজভীর বক্তব্য এসব বলার কারণ হল - অাওয়ামীলীগ সরকার এই ফাউ হামলা করে তাঁদের সুনাম শেষ করে দিবেনা। কারণ এতে অাওয়ামীলীগের লাভ নাই। অাওয়ামীলীগ নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এসব করে নিজেদের পায়ে খোঁড়াল মারবেনা। কারা করছে এসব ঘটনা তা থেকেই বুঝা যায়। বিএনপির এসব সস্তা নাটক জনগণ ভালমতই জানে। এসব সস্তা নাটকের অাসল কারিগর হল রিজভীরাই! যেখানে খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের কাছে চলে অাসে সেখানে রিজভীর মত গুরুত্বপূর্ণ নেতা ঢাকা রয়ে যায়! প্রেস ব্রিফিং দিতে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে বসে থাকে !

রাজনীতির প্রতিপক্ষ হিসেবে যদিও হামলা হয় বিএনপি নেতাদের উপর হওয়ার কথা! সেখানে শুধু মিডিয়ার উপর! অামজনতা এখান থেকে বুঝে নেয় কারা করল, কারা অাহত হল, কেন হল। মিডিয়া তো তা বুঝে বটে।

এসব জনগণও ভালই বুঝে। সস্তা নাটকে মানুষ এখন প্রতিবাদ করেনা! উল্টো হয় তার প্রতিক্রিয়া। হাস্যরসের সৃষ্টি হয় রাজনীতির মাঠে।

লেখক : রাজনৈতিক কর্মী।

(ওএস/অ/অক্টোবর ৩০, ২০১৭)