গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : রাজধানী ঢাকায় এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতে গিয়ে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ১২ বছরের কিশোরী তানজিলা আক্তার রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার ৭মাস পেরিয়ে গেলেও তাঁর কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তানজিলা নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর পরিবার গৌরীপুর থানায় একটি অভিযোগ করলেও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। তবে তানজিলার পরিবারের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে বিদেশে পাচার কিংবা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গৌরীপুর উপজেলার শালিহর গ্রামের রাইস মিল শ্রমিক ফখরুল ইসলাম ও গৃহিনী ফজিলা বেগমের কণ্যা তানজিলা তিন বোনের মধ্যে সবার বড়। অভাব-অনটনের কারণে ৮ম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি সে। সংসারে স্বচ্ছলতার জন্য চলতি বছরের মার্চ মাসে তানজিলা প্রতিবেশী আফরোজা আক্তারের মাধ্যমে ঢাকার বাসিন্দা এসআই সাবিনা ইয়াসমিনের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ নেয়। এর কিছুদিন পর থেকে সাবিনার বাসা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় তানজিলা।

তানজিলার মা ফজিলা বেগম বলেন, আফরোজা বেগম আমার মেয়েকে ৩ হাজার টাকা বেতনে কাজ করার জন্য পুলিশ অফিসার সাবিনা ইয়াসমিনের বাসায় নিয়ে যায়। এরপর থেকে আমি আমার মেয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছিনা। মেয়ের সন্ধান দিয়ে কেউ আমাদের কাছে মুক্তিপনও দাবি করেনি। আমার ধারণা ওরা আমার মেয়েকে বিদেশে পাচার কিংবা বিক্রি করে দিয়েছে।

তানিজলার বাবা ফখরুল ইসলাম বলেন, মেয়ে নিখোঁজের খবর পেয়ে আমি ঢাকায় গেলে অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করে তাড়িয়ে দেয় পুলিশ কর্মকর্র্তা সাবিনা ইয়াসমিন ও তাঁর পরিবার। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে আমি মেয়ের সন্ধান পাইনি। আমার ধারণা নারী পুলিশ কর্মকর্তা অথবা আফরোজা বেগম আমার মেয়েকে লুকিয়ে রেখেছে কিংবা পাচার করে দিয়েছে।

আফরোজা আক্তার বলেন, আমি তানজিলাকে পাচার কিংবা বিক্রি করে দিয়েছি এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি অনেক মেয়েকে ঢাকায় কাজ দিয়েছি, কারো সমস্যা হয় নাই। শুধু তানজিলাকে পুলিশ অফিসার সাবিনা ইয়াসমিনের বাসায় কাজ দেওয়ার কিছুদিন পর সে নিখোঁজ হয়। সাবিনা ইয়াসমিন বলেছে, তাঁদের বাসার সিসি ক্যামেরায় ফুটেজে ধরা পড়েছে তানজিলা বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে। এরপর তাঁরা থানায় জিডি করে ঢাকার দেয়ালে দেয়ালে সন্ধান চাই পোস্টার সাটিয়েছে।

গৌরীপুর থানার এসআই শাহ জালাল বলেন, তানজিলা নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর পরিবার থানায় অভিযোগ দিয়েছিলো। কিন্তু ঘটনাস্থল ঢাকা হওয়ায় তারা তদন্ত করতে পারছেন না। তিনি জানতে পেরেছেন মেয়েটি নিখোঁজের পর ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকার ইসলামপুর থানায় জিডি করেছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে (নারী) উপপরিদর্শক সাবিনা ইয়াসমিনের মুঠোফোনে(০১৭১২-৯৭৬০৭৯) একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

(এসআইএম/এসপি/নভেম্বর ০১, ২০১৭)