টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নামের ভুলে হত্যা মামলার আসামি হয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. সাদ্দাম হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২০১৫ সালের ১৩ মে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাদাত খালেদ মোশারফ নিহত হন।

এ ঘটনায় ১৬ মে মোশারফের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে ১৪ জনের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে একই বছরের ৩ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের জবানবন্দি ও সাক্ষীদের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক অশোক কুমার সিংহ। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ১৩নং আসামি মো. সাদ্দাম হোসেন সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

এ ব্যাপারে মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমি ঘটনার সাথে জড়িত নই। আমার বিভাগের অন্য এক শিক্ষার্থীর সাথে আমার নামের মিল থাকায় এমনটা হয়েছে। চার্জশীটে (অভিযোগপত্র) বলা হয়েছিল আসামি ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী; কিন্তু আমি তখন ২য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের ছাত্র ছিলাম।

সাদ্দাম আরো বলেন, যেহেতু আমার নামে মামলা হয়েছে, তাই আদালতকে সম্মান জানিয়ে ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি হাজিরা দিয়েছিলাম। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল-হাজতে পাঠায়। পরে একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পাই। আমি যে বিষয়টির সাথে জড়িত নই, এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরীয় বডির সদস্যরা, আমার বিভাগীয় প্রধান ও কয়েকজন সাক্ষী প্রত্যয়ন করেছে।

সাদ্দাম বলেন, দোষী না হয়েও জেল খাটতে হলো আর এখনো নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। অথচ যে দোষী তার কিছু হলো না- এটার নাম ন্যায় বিচার হতে পারেনা।

মামলার ২নং সাক্ষী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলী আহম্মেদ ফয়সাল, ৪নং সাক্ষী বিশ্ববিদ্যালয়ের মান্নান হলের নৈশ প্রহরী মো. নাজিম উদ্দিন ও ৫নং সাক্ষী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মো. মোতালেব নোটারী পাবলিক টাঙ্গাইলের মাধ্যমে এফিডেভিট করে বলেন, মো. সাদ্দাম হোসেন সম্পর্কে যতটুকু জানি তিনি একজন মেধাবী ছাত্র। তিনি কোন রাজনৈতিক দল কিংবা কোন গ্রুপের সঙ্গে জড়িত নন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক অশোক কুমার সিংহ বলেন, যাচাই-বাছাই করেই চার্জশীট দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি অনেকদিন আগের। এখন নানা কারণে সাক্ষীরা বক্তব্য পরিবর্তন করতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি মো. সাদ্দাম হোসেন ঘটনার সাথে জড়িত নয়।


(আরকেপি/এসপি/নভেম্বর ০২, ২০১৭)