টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর বাজার কলার রাজধানী হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সপ্তাহের দুইদিন রোববার ও বুধবারে কুতুৃবপুর বাজারে হাট বসে। এ হাট থেকে প্রায় কোটি টাকার কলা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। এর মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ টাকার কলা যায় ঢাকা নগরীসহ জেলার বিভিন্ন বাজারে। আর বাকি কলা যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে।

কুতুববপুর বাজারের কলা ব্যবসায়ীরা জানান, এতদাঞ্চলের সবচেয়ে বড় কলার হাট টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কুতুববপুর বাজার। এখানে উপজেলার কুতুবপুর, বড়চওনা, দাড়িপাকা, শ্রীপুর, তৈলধারা, মুচারিয়া পাথার, শালগ্রামপুর, ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী, জোড়দিঘী, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার গারোবাজার সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শনিবার বিকাল থেকে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং মঙ্গলবার বিকাল থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কলা আমদানি হতে থাকে। কলাচাষী এবং ছোট ব্যবসায়ীরা এ হাটে কলা আমদানি করেন। এর পর তাঁদের কাছ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সেগুলো কিনে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন।

কুতুবপুর হাটের কলার আড়তদার কালাম মিয়া জানান, প্রতি হাটে এখান থেকে ১২ থেকে ১৫ ট্রাক কলা দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। কলা ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এখানে সাতটি আড়ত গড়ে উঠেছে। কুতুবপুর বাজার ব্যবসায়ী, আড়তদার ও স্থানীয়দের কাছে কলার রাজধানী হিসিবে পরিচিতিও পেয়েছে।

কুতুবপুর হাট ঘুরে ব্যবসায়ী ও কলা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর কলার দাম অনেকটা বেশি। প্রতি কাঁধ কলা এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। কলার কাঁধের ওপর নির্ভর করে দাম কমবেশি হয়ে থাকে বলে জানান কলা ব্যবসায়ী শাহাদত হোসেন।

তিনি আরো জানান, এ বাজারের কলাগুলো খুবই উন্নত মানের এবং এখানকার কলার চাহিদা দেশের সর্বত্রই রয়েছে। এ কারণে এখানে কলার দামও একটু বেশি। ১৫ থেকে ১৮ ছড়ি মধ্যম মানের একটি কলার কাঁধ বিক্রি হয় অন্তত ৩০০ টাকা দরে। এর চেয়ে ভালো মানের কলা বিক্রি হয় ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
শ্রীপুর গ্রামের কলাচাষী মজিবুর রহমান, দাঁড়িয়াপুরের মুছা মেম্বার জানান, এ উপজেলার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় কলার হাট। অন্যান্য বাজারেই তুলনায় এ বাজারে বেশি কলা বিক্রি হয়। দামটাও কিছুটা ভালো পাওয়া যায়। এ কারণে কুতুবপুরে কলার আমদানিও বেশি হয়।

গারোবাজারের কলাচাষী হায়েত আলী জানান, এ বছর তিনি সাড়ে চার বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০০টি হিসাবে সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে এক হাজার ৫০০টি কলা গাছ লাগিয়েছেন। প্রতি বিঘা জমি থেকে অন্তত ৮০ হাজার টাকার কলা বিক্রি হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান, প্রতি বিঘা জমিতে কলা চাষ করতে তাঁর ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান ফকির বলেন, এ বাজারে সপ্তাহে প্রায় কোটি টাকার কলা বেচা-কেনা করা হয়। তাছাড়া এ বাজার জেলার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত কলার বাজার বলে খ্যাতি পেয়েছে।


(আরকেপি/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০১৭)