সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি : নানান সমস্যায় জর্জরিত মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ রাঙ্গামালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প। দীর্ঘ ১৯ বছরেও সংস্কার হয়নি। আশ্রয়ণে বসবাসরত অর্ধশতাধিক পরিবারেরও হয়নি কোন ভাগ্যের উন্নয়ন। দেখার কেউ নেই। নেই কারো কোন মাথাব্যথা। অথচ বছর বছর প্রকল্প আসে, প্রকল্প যায়। হয় না কোন কাজের কাজ। প্রধান মন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন বসবাসরত আশ্রয়ণবাসী।

এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট তীব্র। দুইটি টিউবঅয়েলের মধ্যে একটি বিকল। বৃষ্টি হলেই ঘরের টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। বৃষ্টির পানিতে ঘরের মেঝে ভিজে বসবাসে দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এছাড়া এখানে স্যানিটেশন ব্যবস্থা রয়েছে বেহাল অবস্থায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা ভেঙে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নিবাসীরা এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন। কেউ অসুস্থ হলে তাকে এ কাচা ভাংগা রাস্তা পার হয়ে ডাক্তারের কাছে নিতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কাঁচা রাস্তা দিয়ে আশ্রয়ণে যান চলাচল ও পণ্য পরিবহণ ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া আশ্রয়ণের ভিটা ও খুঁটি দাঁড়িয়ে রয়েছে কোনোরকমে। এখানে শিশুদের কোনো খেলার মাঠ নেই। এমন সব সমস্যা নিয়ে দিন কাটছে সিরাজদিখানের বাসাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ রাঙ্গামালিয়া আশ্রয়ণের অর্ধশত পরিবার।

এখানকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল খান(৭২) বলেন, এসব সমস্যার কথা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বার বার জানিয়েও কোনো ফল হয়নি। কেউ আগ্রহও দেখাননি। এসব সমস্যা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারো।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ভিটা ও বসতঘরসহ যা কিছু আছে সেগুলোর কোনো রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করা হচ্ছে না।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের শ্রী শ্যাম চরণ দাস, মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল খান, করিম বেপারী,মরিয়ম,শ্যামলী,নূর নাহার,আলেয়া বেগম,মোঃ হাসমত আলী,শিরিন বেগমসহ অর্ধশতাধিক বসবাসকারী অভিযোগে বলেন, ১৯৯৮ অর্থবছরে প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ ত্রাণ তহবিলের অর্থ দিয়ে তৎকালীন সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবাধানে ২ টি ইউনিটের ২০ টি পরিবারের বসবাসের জন্য টিন সেডের দোচালা ঘর নির্মাণ করেন। ঐ নির্মাণের পর থেকেই আর কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি।

তারা আরো বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খুব কম আসেন। ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররাও আমাদের রাস্তার বেশী টাকার কাজ করেননি কখনো। প্রতিটি ঘরের টিনগুলো এখন পুরানো ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে কোনরকমে ঘড়গুলো দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমাদের প্রধান সমস্যা জরার্জীণ ঘড় সংস্কার হয়নি, চলাচলের কোন ভালো সড়ক নেই।

আয়ের উৎস্য একমাত্র মাছ ধরা ও দিনমজুরী করা। পুকুরের পাড় ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ঠেকেছে ঘরের দ্বারে। নামাযের ঘর ছাড়া মসজিদের আর কিছু নেই। মন্দির আছে কিন্তু ঘরের টিন নেই। পুরানো পায়খানা ও টিউবওয়েলগুলোও অকেজো হয়ে বন্ধ রয়েছে।

সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, দক্ষিণ রাঙ্গামালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের সমস্যা শুনেছি। এ সব সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রকল্প গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও এলজিইডিতে পাঠানো হবে। ঘড় সংস্কারসহ সব সমস্যার সমাধান সরকারের সহায়তায় দ্রুত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

(জিডি/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০১৭)